Showing posts with label সাহিত্য. Show all posts
Showing posts with label সাহিত্য. Show all posts

Sunday 28 January 2024

এ কে এম আব্দুল্লাহর  কাব্যগ্রন্থ “ সার্কাস গ্যালারি থেকে মি. আব্দুল্লাহর বয়ান”

এ কে এম আব্দুল্লাহর কাব্যগ্রন্থ “ সার্কাস গ্যালারি থেকে মি. আব্দুল্লাহর বয়ান”


অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০২৪-এ, ইত্যাদি থেকে আসছে- কবি, গল্পকার এ কে এম আব্দুল্লাহর কাব্যগ্রন্থ - সার্কাস গ্যালারি থেকে মি. আব্দুল্লাহর বয়ান। 
 
কবি এ কে এম আব্দুল্লাহ নতুন চ্যালেঞ্জ নিয়েই, গতানুগতিক ধারার বাইরে বাস্তব, পরাবাস্তব, যাদুবাস্তবের মিশ্রণে সৃষ্ট দ্যুতানা কিংবা শ্যাটায়ার প্যটার্নের তীক্ষ্ন রশ্মির চ্যালেঞ্জ নিয়েই নিজেকে ভেঙেচুরে নিজস্ব ভঙ্গিতেই কবিতা লিখেন। 

কবি এ কে এম আব্দুল্লাহ তার লেখালেখি নিয়ে বলেন, “আমার কাছে আমার প্রকাশিত বই বা লেখাগুলো, আমার একটি নিজস্ব বিপ্লব, প্রতিবাদ, বিনোদন এবং একান্ত নিজস্ব কথা বলার মাধ্যম”। 

গতানুগতিক ধারার বাইরে চ্যালেইঞ্জ নিয়েই নিজেকে ভেঙেচুরে নিজস্ব ভঙ্গিতে লেখা কবিতা নিয়ে, এবার ইত্যাদি প্রকাশ করেছে কাব্যগ্রন্থ- “সার্কাস গ্যালারি থেকে মি. আব্দুল্লাহর বয়ান”। 
বইটি অমর একুশে গ্রন্থমেলায় ইত্যাদি - প্যাভিলিয়ন ১১, রকমারি ডট কম সহ বিভিন্ন লাইব্রেরিতে পাওয়া যাবে। মূল্য  দুইশত বিশ (২২০) টাকা।

Friday 19 January 2024

এ কে এম আব্দুল্লাহর ৫টি বইয়ের আলোচনা নিয়ে পোস্টমর্টেম সূচক বই “REFLECTION”

এ কে এম আব্দুল্লাহর ৫টি বইয়ের আলোচনা নিয়ে পোস্টমর্টেম সূচক বই “REFLECTION”


মহান একুশে বইমেলা ২০২৪-এ, অনার্য প্রকাশনী থেকে আসছে- কবি, গল্পকার এ কে এম আব্দুল্লাহর ৫টি প্রকাশিত বইয়ের আলোচনা নিয়ে পোস্টমর্টেম সূচক বই-“REFLECTION”। বইটিতে থাকবে বাংলাদেশ, ভারত এবং যুক্তরাজ্যের বিশ জন কবি, সাহিত্যিকের সারগর্ভ আলোচনা। বইটি সম্পাদনা করেছেন কবি ও সাংবাদিক শফিকুর রহমান চৌধুরী। 

ইতোমধ্যে, বাংলাদেশ সহ বিভিন্ন দেশের অনেক বোদ্ধা পাঠক, লেখক তাঁর লেখার নিজস্ব দর্শন , নিজস্ব স্টাইল, শব্দচয়ন এবং চিত্রকল্প নিয়ে প্রশংসা করেছেন। এ কে এম আব্দুল্লাহ বলেন, পাঠকের ভালোবাসা, প্রশংসা সমর্থন যেমন উৎসাহিত করেছে— তেমনি লিখতেও সহযোগিতা করেছে। সেই উৎসাহ আরো একধাপ এগিয়ে গেলো “রিফ্লেকশন” বইটি প্রকাশের মাধ্যমে। 

কবি এ কে এম আব্দুল্লাহ তার লেখালেখি নিয়ে বলেন, “আমার কাছে আমার প্রকাশিত বই বা লেখাগুলো, আমার একটি নিজস্ব বিপ্লব, প্রতিবাদ, বিনোদন এবং একান্ত নিজস্ব কথা বলার মাধ্যম”। 

রিফ্লেকশন বইটিতে যে পাঁচটি বইয়ের আলোচনা করা হয়েছে সেগুলো হলো- যে শহরে হারিয়ে ফেলেছি করোটি , ইমেইল বডিতে সময়ের অনুবাদ, শাজরাত কাঠের ক্যারাভ্যান ও আত্মার ফ্লেক্সিলোড, মাটির মাচায় দণ্ডিত প্রজাপতি এবং  টি-ব্রেকের গল্প।

আলোচনা করেছেন, কবি নির্মলেন্দু গুণ, কবি অসীম সাহা, কবি হেলাল হাফিজ, ড. মোহন রায়হান, ড. পরিমল ভট্টাচার্য, ড. শংকর সাহা, কবি কাজল ভট্টাচার্য, তমাল কান্তি সরকার, ড. এসরাজুল হক সহ বিশজন কবি সাহিত্যিক। 
বইটি অনার্য প্রকশনীর স্টল রকমারি ডট কম সহ বিভিন্ন লাইব্রেরিতে পাওয়া যাবে।

Friday 15 September 2023

লন্ডনে ২দিনব্যাপী বাংলাদেশ বইমেলা সম্পন্ন

লন্ডনে ২দিনব্যাপী বাংলাদেশ বইমেলা সম্পন্ন

সফলভাবে শেষ হল দুইদিনব্যাপী ১১তম বাংলাদেশ বইমেলা সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক উৎসব ২০২৩, লন্ডন   ________________________  


সম্মিলিত সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক পরিষদ যুক্তরাজ্য এর উদ্যোগে- লেখক-পাঠক,প্রকাশক, সাংবাদিক, সাহিত্যপ্রেমী ও শুভানুধ্যায়ীদের উপচে পড়া ভিড়ের মধ্য দিয়ে সমাপ্ত হলো সম্মিলিত সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক পরিষদ যুক্তরাজ্যের উদ্যোগে দুদিনব্যাপী ১১তম  বাংলাদেশ বইমেলা সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক উৎসব ২০২৩। ১০ই সেপ্টেম্বর রবিবার  ইস্টলন্ডনের দ্যা আর্ট প্যাভিলিয়ন, মাইল এন্ড- পার্কে উদ্বোধনী অধিবেশনের মাধ্যমে শুরু হয় দুইদিনব্যাপী বাংলাদেশ বই মেলা সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক উৎসব।  দুপুর ২.৩০ মিনিটে ফিতা কেটে মেলার শুভ উদ্বোধন করেন স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্ত  রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা। এসময় উপস্থিত ছিলেন- বীর মুক্তিযোদ্ধা বিজ্ঞানী একুশে পদকপ্রাপ্ত লেখক যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী  ড. নুরুন নবী, ডেপুটি হাইকমিশনার জনাব হযরত আলী খান, বিজ্ঞানী ড. জীনাত নবী, তাইসির মাহমুদ( জেনারেল সেক্রেটারি, লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাব)সহ পুরস্কারপ্রাপ্ত কবি- সাহিত্যিক এবং প্রকাশক, লেখক পাঠক, সাংবাদিক সহ সাহিত্যপ্রেমী কমিউনিটি নেতৃবৃন্দ।  সম্মিলিত সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক পরিষদের সদস্য-সংগঠন উদিচী ও সত্যেন সেন স্কুলের শিল্পীদের  জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় উদ্বোধনী পর্ব। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক কবি এ কে এম আব্দুল্লাহর সঞ্চালনায় উদ্বোধনী পর্বে, সভাপতি কবি ময়নূর রহমান বাবুল, আমন্ত্রিত অতিথিদের স্বাগত জানান। এ সময় রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা বলেন ‘লন্ডনে এমন ব্যাপক পরিসরে  বই মেলার উদ্বোধনী  করতে পেরে সত্যিই আমি আনিন্দিত  বাংলাদেশের বাইরে এত সুন্দর আয়োজন  আমাকে মুগ্ধ করেছে’। ড. নুরুন নবী বলেন, ‘ আমি এই মেলায় অংশগ্রহণ করতে পেরে খুবই আনন্দিত। বহর্বিশ্বে এ ধরনের বিশাল বইমেলায় অংশগ্রহণ করতে পেরে আনন্দিত। আমি মুক্তধারার বইমেলা আয়োজনের সাথে জড়িত। এত ব্যাপক আয়োজন কতটুকু কষ্টসাধ্ তা বুঝতে পারি। এরপরও দেশের বাইরে আমাদের সাহিত্য সংস্কৃতি বিকাশে আয়োজকদের ধন্যবাদ জানাই”। উদ্বোধনী পর্ব শেষে অতিথিরা মেলায় বঙ্গবন্ধু প্যাভিলিয়ন সহ বাংলাদেশ থেকে আগত প্রকাশনীস্টল পরিদর্শন করেন এবং উপস্থিত প্রকাশকদের সাথে কথা বলেন। মেলায় ১৭টি স্টল এবং স্টেজের সৃজনশীলতায় ভূয়াসী প্রশংসা করেন।

উল্লেখ্য, ১১তম বাংলাদেশ বইমেলা উপলক্ষ্যে প্রকাশিত হয়েছে প্রায় ২১টি প্রকাশনা। মেলায় প্রায় ১৯টি প্রকাশিত বই ২টি লিটলম্যাগের মোড়ক উন্মোচন করা হয়। এছাড়া মূল মঞ্চে সংগঠনের প্রকাশনা “তৃতীয় বাংলা” ২য় সংখ্যার মোড়ক উন্মোচন করা হয়। পুরোদিন জুড়ে সাহিত্য- সংস্কৃতি প্রেমীদের পদচারনায় মুখরিত ছিল মেলা প্রাঙ্গন। উপস্থিত সকলেই মেলায় অংশগ্রহণ করতে পেরে খুবই খুশি বলে অনুভুতি প্রকাশ করেন। 


দুদিনব্যাপী বইমেলা সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক উৎসবে ছিল আলোচনা, শিশুদের পরিবেশনা, মোড়ক উন্মোচন, নৃত্য,কবিতা আবৃত্তি, স্বরচিত কবিতাপাঠ, সংগীত সহ নানা আয়োজন।  “বহির্বিশ্বে বাংলা সাহিত্য চর্চার সাম্প্রতিক প্রবণতা” এবং “বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে বিলাতের নারী সমাজের ভূমিকা” শির্ষক দুটি গুরুত্বপূর্ণ সেমিনার পুরো মেলাকে অনন্য করে তোলে। অ্যাপাসেন লার্নার্স কালচারালাল গ্রুপের পরিবেশনা (লার্নিং ডিসিবিলটি শিল্পীদের সংগীত পরিবেশনা) ছিল অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ও উচ্ছ্বাসিত। এই পরিবেশনা মেলায় নিয়ে আসে এক নতুন মাত্রা।এধরনের অনুষ্ঠানের সুযোগ করে দেয়ায় সকলেই ভূয়াসী প্রসংশা করেন।আলোচনা পর্বে অংশগ্রহণ করেন ড. নুরুন নবী ( বীর মুক্তিযোদ্ধা,বিজ্ঞানী, লেখক),  রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা( বরেণ্য রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী),হযরত আলী খান(ডেপুটি হাইকমিশনার), ড. জিনাত নবী(বিজ্ঞানী, লেখক), সুলতান মাহমুদ শরীফ,সৈয়দ ( বীর মুক্তিযোদ্ধা, রাজনীতিবীদ), সামাদুল হক(সাংবাদিক , ব্যবস্থাপনা পরিচালক বাংলা টিভি), ফরিদুর রহমান(বিশিষ্ট সাংবাদিক, চিন্তাবীদ, মুক্তিযোদ্ধা) অরণ্য আনোয়ার ( নাট্য নির্মাতা, স্ক্রিপ্ট রাইটার), মাহমু হাসান (এমবিই), সালেহা চৌধুরী (বিশিষ্ট কথা সাহিত্যিক), শাগুফতা শারমিন তানিয়া( কথা সাহিত্যিক), বুলবুল হাসান(সাংবাদিক), সেজুতি মনসুর( ইয়াং রাইটার) প্রমুখ। আলোচনা পর্বটি পরিচালনা করেন বাচিক শিল্পী মুনিরা পারভিন। 

সংগঠনের পক্ষ থেকে এবছর সম্মাননা পদক (সাহিত্যে ) কবি, সাংবাদিক জনাব হামিদ মোহাম্মদকে প্রদান করা হয়। বিশিষ্ট আবৃত্তি শিল্পীদের আবৃত্তি এবং বিভিন্ন শহর থেকে আসা কবিদের স্বরচিত কবিতাপাঠ সবাই মুগ্ধ করে রাখে। 
বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. নুরুন নবীর সাথে মুক্তযুদ্ধ বিষয়ক কথোপকথন অনুষ্ঠানে ৭জন বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অংশগ্রহণ ও স্মৃতিচারণ পুরো আয়োজনকে নান্দনিক করে তোলে। 
সমাপ্তি পূর্ব  বাংলাদেশ থেকে অংশগ্রহণকারী উপস্থিত প্রকাশকদের হাতে সংগঠনের পক্ষ থেকে সম্মাননা ক্রেস্ট তোলে দেয়া হয়। প্রকাশকদের পক্ষ থেকে সময় প্রকাশনীর কর্নধার জনাব ফরিদ আহমদ মেলা নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন প্রবাসে এধরনের উৎসবমুখর বইমেলা দেখে আমি অভিভূত। 

বিভিন্ন পর্বে অংশগ্রহণ করেন- মিলটন রহমান, আমিনা আলী, ফারুক আহমদ, সুজাত মনসুর,ইকবাল হোসেন বুলবুল, ফারাহ নাজ, মোস্তফা জামান চৌধুরী, আবু মকসুদ,হেনা বেগম, নাজ নাঈম। 

১০ ও ১১সেপ্টেম্বর, রবিবারে শুরু হওয়া বইমেলা সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক উৎসব সোমবার রাত সাড়ে দশটায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সফলভাবে সমাপ্ত হয়।

Friday 25 August 2023

১১তম বইমেলা উপলক্ষে লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশনারের সাথে মতবিনিময় অনুষ্ঠিত

১১তম বইমেলা উপলক্ষে লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশনারের সাথে মতবিনিময় অনুষ্ঠিত



১১তম বাংলাদেশ বইমেলা সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক উৎসব ২০২৩ উপলক্ষে লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশনারের সাথে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।


বুধবার (২৩শে আগস্ট) বাংলাদেশ হাইকমিশনে সম্মিলিত সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক পরিষদ যুক্তরাজ্যের উদ্যোগে আসন্ন ১১তম বাংলাদেশ বইমেলা সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক উৎসব উপলক্ষে মাননীয় হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম- এর সাথে আগামী ১০ ও ১১ই সেপ্টেম্বর আর্ট প্যাভিলিয়ন- মাইল এন্ড-এ অনুষ্ঠিতব্য বইমেলার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মতবিনিময় অনুষ্ঠিত হয়। এসময় তিনি গতবারের ১০ম বাংলাদেশ বইমেলা সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক উৎসব অত্যন্ত নান্দনিক ও সৃজনশীলতায় ভরপুর এবং সফলভাবে আয়োজনের জন্য সংগঠেনর ভূয়সী প্রশংসা করেন।

সংগঠনের সকল কর্মকর্তাদের ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে তিনি বলেন, ‘প্রবাসে শতব্যস্ততায় মাঝেও আপনারা বাংলা সাহিত্য সংস্কৃতি চর্চা করছেন, এ ধারা যেন অব্যাহত থাকে। এতে আমাদের এখানে বেড়ে ওঠা প্রজন্ম খুঁজে পাবে তাদের শিকড়’।


আসন্ন বইমেলায় হাইকমিশনের পক্ষ থেকে বঙ্গবন্ধু প্যাভিলিয়ন-সহ সবধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন।

মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন ডেপুটি হাইকমিশনার মোহাম্মদ হযরাত আলী খান, কাউন্সিলর মৌমিতা জীনাত। সম্মিলিত সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক পরিষদের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন  সভাপতি ময়নূর রহমান বাবুল, সহ-সভাপতি আবুল কালাম আজাদ ছোটন, সাধারণ সম্পাদক এ কে এম আব্দুল্লাহ, সহ-সাধারণ সম্পাদক মোসাইদ খান, ইসি সদস্য আতাউর রহমান মিলাদ।

Wednesday 7 June 2023

কবিতাস্বজন ইউকে'র আয়োজনে অনুষ্ঠিত হল ‘সাহিত্য আড্ডা’

কবিতাস্বজন ইউকে'র আয়োজনে অনুষ্ঠিত হল ‘সাহিত্য আড্ডা’


কবিতাস্বজন ইউকে-এর আয়োজনে অনুষ্ঠিত হল এক প্রাণবন্ত ‘সাহিত্ আড্ডা’। ৫ই জুন ২০২৩, সোমবার ইস্টলন্ডনে অবস্থিত লন্ডনবাংলা প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত সাহিত্য আড্ডায় অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ থেকে আগত কবি ও ছড়াকার জিন্নাহ চৌধুরী। 

কবি আতাউর রহমান মিলাদের সভাপতিত্বে ও এ কে এম আব্দুল্লাহর পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সাহিত্য আড্ডায় কবিতাপাঠ ও আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন- কবি গল্পকার হামিদ মোহাম্মদ, কবি গল্পকার ময়নূর রহমান বাবুল,কবি গোলাম কবির, গবেষক ফারুক আহমদ, কবি কাবেরি মুখার্জি, কবি ফারুক আহমেদ রনি, কবি মাশূক ইবনে আনিস, কবি ইকবাল হোসেন বুলবুল, কবি মজিবুল হক মনি, সাংস্কৃতিক কর্মী আশরাফ নেসওয়ার, কবি মোহাম্মদ ইকবাল, কবি শাহ শামিম, কবি মোসাইদ খান, কবি শামীম আহমদ, টিভি উপস্থাপক  ও সাংস্কৃতিক কর্মী হেনা বেগম, কবি মরিয়ম চৌধুরী, কবি শাহ সোহেল, কবি মোহম্মদ মুহিদ, ছড়াকার সৈয়দ হিলাল সাইফ সহ অনেকে। 

কবিতাস্বজনের পক্ষ থেকে অতিথিকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান মোসাইদ খান, হেনা বেগম ও মরিয়ম চৌধুরী।

আড্ডা শেষে কবি জিন্নাহ চৌধুরীকে সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করা হয়। প্রাণবন্ত কথা, কবিতা আর ছড়া আড্ডায় উপস্থিত সকলকে কবিতাস্বজনের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করা হয়। 

Sunday 22 May 2022

বই আলোচনা: ইমেইল বডিতে সময়ের অনুবাদ

বই আলোচনা: ইমেইল বডিতে সময়ের অনুবাদ


গ্রন্থ আলোচনা 
-সাঈফ ফাতেউর রহমান

গ্রন্থের নাম:  ইমেইল বডিতে সময়ের অনুবাদ
গ্রন্থের প্রকৃতি: কাব্যগ্রন্থ 
গ্রন্থকার; এ কে এম আব্দুল্লাহ
প্রথম প্রকাশ: ফেব্রুয়ারি ২০১৯
স্বত্ব: লেখক
প্রকাশক: অনার্য পাবলিকেশন্স লি:
১১১ নয়াপল্টন (৬ষ্ঠ তলা) পল্টন-১০০০
প্রচ্ছদঃ  অনিন্দ্য রাইয়ান 
মুদ্রণঃ প্রিয়াংকা প্রিন্টার্স
পৃষ্ঠা সংখ্যাঃ ৭২
কবিতা সংখ্যাঃ ৬৪
মূল্যঃ ১৮০  টাকা

কবি এ কে এম আব্দুল্লাহ প্রবাসী কবি। যুক্তরাজ্যে দীর্ঘ প্রবাসেও বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতির সাথে তার সংযোগ ও সংহতি অচ্ছেদ্য। নিবিড় অধ্যাবসায় ও অনুধ্যানে তিনি বাংলা সাহিত্যের নিবেদিত সেবায় নিজেকে নিমগ্ন রেখেছেন। বিদেশের ব্যস্ততমতার মাঝেও নিজ সাহিত্য ও সংস্কৃতি লালন কেবল নয়, এর পৃষ্ঠপোষকতা, প্রসার ও সামগ্রিক উন্নয়নে একাগ্রতায় নিজেকে নিবিষ্ট রেখেছেন। বিশেষত কবিতা প্রেম তাঁর অন্তর্প্রবাহে যে সুমিত বোধ প্রতিনিয়ত উন্মোচিত ও পরিবর্ধিত হয় তা এক অনাবিল সুরময়তার আসমুদ্র সুন্দরতা বিস্তৃত করে দেয়। জীবনের আবৃত অনাবৃত সমুদয় দিক এবং অনাস্বাদিত জীবন বাস্তবতা, পরাবাস্তবতা এবং আগত দিনের জীবন অনুভবের অগ্রিম দ্যোতনা সন্নত প্রভাবনা তাঁর অস্তিত্বের মর্মমূলে সুবহ প্রাণসঞ্জীবণী সুবিস্তার করে। অন্তঃসলিলা ফল্গুর মত অসামান্য গুঞ্জরণে বিপুল সংবেদী জীবনময়তা তাঁকে আবিষ্ট করে। তিনি নিবিড় সুন্দরের অতল থেকে অতলতরতায় অবগাহন করতে থাকেন। নিমীলিত চোখ অথচ উন্মিলিত মনন সুরভিময়তায় তিনি প্রত্যক্ষ করেন চলমানতা এবং আগত  দিনের সকল শুদ্ধ চৈতন্যের উন্মেষের মাহেন্দ্রক্ষণ। প্রতিকূলতার অচলায়তন অপসৃত হয়ে যেতে থাকে, জীবন অপার্থিব জোৎস্নাময় প্রভায় নন্দন সুস্নিগ্ধ হয়ে ওঠে আর হৃদ-অতলান্তিকের গভীরময়তার ভেতর থেকে সৃষ্টি সমগ্র ঝংকৃত করে বেজে উঠতে থাকে অমল জীবনের শুদ্ধস্বর। উচ্চকিত ভাবনাকে অবলম্ব মেনে কবি উদ্বেল আনন্দ অবগাহনে নিজেকে আবিষ্কার এবং প্রতি আবিষ্কার করতে থাকেন। প্রতিনিয়ত এই বোধিক শ্রীময়তার মাঙ্গলিকে তিনি ক্রমোত্তীর্ণ হতে থাকেন জীবনের সঘন মায়াবী পুলকানন্দে। 

কবি এ কে এম আব্দুল্লাহ কবিতা ও জীবনকে এক সুতোয় গ্রথিত করে ফেলেন। বুনন শোভনতায় জীবন হয়ে ওঠে আদিগন্ত এক নকশী কাঁথা। এর স্থানিক বিন্যাসে সব সুর, সব স্বপ্ন, সব শ্রী, সব অশ্রী, সব সুশীল ও দুঃশীল স্থাপিত হয় ভারসাম্যময় সহাবস্থানে। নকশী কাঁথার চিত্রিত বৈচিত্র্যে প্রতিফলিত রোদ্দুরের মায়াবী জাদু। আর অন্তরীক্ষে পাশব সত্তা নিয়ে কূটিল উঁকিঝুঁকি দিতে থাকে ধুরন্ধর ইঁদুর কোন। কখনো ড্রাকুলা অস্তিত্বমান হতে থাকে। তবে বাস্তবের পাহাড় প্রতিবন্ধক অতিক্রমণের দুঃসাহসিকতা অর্জনে অক্ষম, নিজের বিবরাশ্রয়েই ফিরে যায়। কবি আব্দুল্লাহ’র কবিতার মন্ময় হেসে ওঠে। সোনারং রোদ্দুর ঝিলিমিলি করে। ইমেইল বডিতে সময়ের অনুবাদ, প্রতিরোধ দেয়াল অতিক্রমণের অসাধ্য সাধন করে। কবি আব্দুল্লাহ’র সৃজন পেলব হাসির ঐন্দ্রজালিকতায় আলোক ছড়ায়।

কবি এ কে এম আব্দুল্লাহ’এর চতুর্থ কাব্যগ্রন্থ “ই মেইল বডিতে সময়ের অনুবাদ”।প্রথম কাব্যগ্রন্থ “সচেতনা” দিয়ে তার যাত্রারম্ভ। পর্যায়ক্রমে প্রকাশ করেছেন কাব্যগ্রন্থ” মাটির মাচায় দন্ডিত প্রজাপতি” ও “ যে শহরে হারিয়ে ফেলেছি করোটি”। এছাড়া প্রকাশিত হয়েছে তাঁর উপন্যাস “ক্ষুধা ও সৌন্দর্য”। সম্পাদনা করেছেন অণুগল্প সংকলন “শব্দবিন্দু”। বাংলাদেশ ও ভারতের বিভিন্ন খ্যাতনামা প্রতিষ্ঠান থেকে পুরষ্কৃত হয়েছেন সাহিত্যকর্মের জন্য। ব্যস্ত জীবনের মাঝেও সাহিত্য সাধনা বিশেষত কবিতার সাথে তাঁর হার্দ্যিকতা নিবিড় ভালোবাসার সুরানুভবে উদ্বেল। বর্তমানে যুক্তরাজ্যের লন্ডনের কেনিংটাউনে বসবাস করলেও তাঁর অন্তর গভীরে এখনো দীপ্যমান বনগ্রাম, গোলাপগঞ্জ, সিলেট, বাংলাদেশ।

কাব্যগ্রন্থ “ই মেইল বডিতে সময়ের অনুবাদ” মৌলিক ভাবনার সুচিত্রায়নে আধুনিক এবং ক্রম বিস্তৃতিতে উত্তরাধুনিক কবিতার অঙ্গনে প্রবেশ শুধুই নয়, শক্ত ভিতের উপরে নিজেকে সুপ্রতিষ্ঠিত করার দুর্মর শক্তিমত্তা নিয়ে আবির্ভূত হয়েছে।  চিত্রকল্প, আধুনিকতা এবং আধুনিকতার যাবতীয় অনুষঙ্গ, প্রযুক্তি এবং তার জীবনানুগ সংশ্লেষ যেমন বাঙ্ময়, তেমনই দৈশিক চেতনা, দেশপ্রেম, মানবপ্রীতি এবং আন্তর্জাতিকতাবাদের মশাল তুলে ধরার প্রত্যয়ী সুহাস কবিতার অণুতে পরমাণুতে। বীক্ষণ এবং বিশ্লেষণ সহজায়ত্ব না-ও হতে পারে সকলের জন্য, তবে নিষ্ঠ কবিতাপ্রেমী পাঠক এই কাব্যগ্রন্থ পাঠে আদ্যন্ত অনুন্মোচিত রহস্যাবরণ উন্মোচনের স্বাদ এবং আহ্লাদ যুগপৎ মেটাতে পারবেন।

কবি এ কে এম আব্দুল্লাহ তাঁর কাব্যগ্রন্থ “ই মেইল বডিতে সময়ের অনুবাদ” উৎসর্গ করেছেন-
“পাঠক
দু’হাজার বাহান্ন সাল” কে।
উৎসর্গপত্রেই কবির স্পষ্ট ইঙ্গিত আগত দিনের কবিতা এবং কবিতাপ্রেমীদের সাথে সংযোগ ও সংশ্লেষ এবং মিথস্ক্রিয়ার প্রকাশ্য বা অপ্রকাশ্য ইচ্ছা বা আকাঙ্খা তাঁর অন্তর্জগতে আপাত অন্তরীন থাকা মোটেই অসম্ভব নয়। 
কাব্যগ্রন্থটির একটি বড় অংশ নিরেট গদ্যরীতিতে নির্মিত কবিতা। অথচ পাঠক অনায়াসে অনুভব করবেন এর অন্তঃস্থ কবিতা-গীতির কলস্বর। কয়েকটি কবিতার আংশিক উল্লেখ করা যেতে পারে।

কাব্যগ্রন্থের প্রথম কবিতা “পেনড্রাইভ ও একটি কবিতা”।
“স্মার্ট টিভি থেকে নেমে আসা ইমোশনে আমি আনন্দায়িত হই। আর এই দৃশ্য দ্যাখে ধূমায়িত ল্যাটের কাপে-নিজস্ব আইটিউব থেকে নেমে আসে একবিংশ শতাব্দীর সুরেলা চিত্র এবং পকেটের ভেতর থেকে স্যামসং ফোন কাঁপিয়ে বেরিয়ে আসা নিপুণ হাত আমার প্লেটে ঢেলে দিলে দইবড়া; কাঁটাচামচের ফাঁক দিয়ে ঝরে পড়ে পংক্তির মাপজোখ। আমার ভেতরে পরাবাস্তবতা প্রখর হয়ে ওঠে। আমি স্কেইট বোর্ডের ওপর ক্যামেরা রেখে যে কবিতা নির্মাণ করতে চেয়েছিলাম, তার ভেতর অকস্মাৎ ভর করে আন্ড্রে ব্রেটন।----------------------------- 
---------- এরপর দৃশ্যগুলো পেনড্রাইভে সেভ করে ঢুকে পড়ি নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেলে। যেখানে দৃশ্যায়িত হচ্ছে আগামী শতাব্দীর একেকটি কবিতা।“ 
প্রযুক্তিগত উৎকর্ষের এই জীবন বাস্তবতায় হিরন্ময় উপলব্ধির নিবিড়তায় নির্মিতি এই কবিতা সংবেদী পাঠককে আপ্লুত করবে সন্দেহাতীতভাবেই। 

“আঁধারে রঙিন ফ্লেক্সিলোড” এক অসামান্য দ্যোতনাময় রূপকাশ্রয়ী গীতল কবিতা- 
“ফাইভস্টার হলরুমে আমাদেরকে নিয়ে যে এক্সিবিশন হয়-সেখানে কাঁচের মুগ্ধময় গ্যালারিতে আমরা শোভা বৃদ্ধি করি।এরপর পার্সেন্টেজের গড় দরকষাকষি শেষ হলে পৃথিবীর মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিগুলো আমাদের মুখচাউনি স্পন্সর করে। আমরা পণ্য হই। আমাদের মাথা স্পর্শ করে সেই স্পন্সরের আশীর্বাদ। স্যুট-বুট পরে কেউ নিয়ে যায় তাদের বাড়িতে।“

কবি’র মনোজগতে এবং অন্তর্জগতে কখনো বোধিক শূন্যতার হাহাকারের প্লাবন নামে। ধূসর পান্ডূরতায় সমাকীর্ণ হয় চারপাশ। এরই অনিন্দ্যসুন্দর রূপায়ন “মেটেলের পাখি ও সাহারা প্রকল্প” কবিতায়- 
“মাঝে মাঝে আমার স্বপ্নের ভেতর, পুরো পৃথিবী একটি সাহারা মনে হয়। যে সাহারা, বুকে পাখি পুষে। পাখিটি কৌশলে শুধু নিজের কথা বলে। সারাটি বছর কেবল অজুহাত খুঁজে। একসময় সাহারার দেহ শুকিয়ে গেলে পাখিটি উড়ে যায় নিজের দ্বীপে।---------------------------------------
-----------আমি ভেঙে যাওয়া জকিদের পাশে দাঁড়িয়ে দেখি কর্তালের ঝংকার  থেকে নেমে আসা সুটুযে- এমজে ফন্টজে-বিগত রচনা অদৃশ্য হয়ে যাচ্ছে অন্যপথে।--------আর সাহারা তখন সদ্যমৃত উটের জিহ্বা চুষছে বাহুতে জড়িয়ে।“

“সময়ে কপি পেস্ট” প্রতীকি ব্যাঞ্জণাময়তায় উত্তর আধুনিক কবিতার অনবদ্য সুপ্রকাশ- 
“দুর্বাঘাসের ঠোঁট বেয়ে নেমে যাচ্ছে দেহের লাল রং--------------
--------মাঝেমধ্যে আমাদের হাত-পা-মাথা কেটে কেটে ছুড়ে দিই সজ্জিত ট্যাংকের ওপর। আমরা ধর্ম-কর্ম নিয়ে বড়াই করি। ধর্মগ্রন্থ গলায় ঝুলিয়ে রাখি।------------------------------
--------এভাবে আমরা ভুলে গিয়ে সিনাই পর্বতের কথা; উটপোড়া মাংসের গুহায় যাই ডুবে। পিরিচ ভর্তি আত-ত্বীন আর জাইতুনের স্বাদ নিতে নিতে আমাদের গাউনের ভেতর জমে আঁধারদানা।“

“একটি প্রার্থনার অনুবাদ” কবিতায় অনুভব ও আত্মজাত সমীক্ষণে জীবনের গভীরতর বেদনা, প্রতিবন্ধকতা এবং অনিবার্য দ্বৈরথের পারঙ্গম উপস্থাপন। 
“ইলিশের পেট থেকে যখন নেমে আসে সাংস্কৃতিক পেটি আমরা উডেন ওভেনে গ্রিল করি। আর ড্রয়িংরুমে বসে বসে সুইটি-চিলি সস লাগিয়ে খাই। এসব দৃশ্য তুলে রাখি ইউসবির তাকে।-----------
-------------------আমাদের ঝুড়ি ভরে যায় পদকে। আমাদের মেধা পাচার হয়ে যায়। আমরা সাধারণ মানুষের ভাবনা কেনাবেচা করি।------------------------------------------------------
------আমাদের ভেতর জ্বলে ওঠে ইলেকট্রিক হিটারের আগুন। এ সুযোগে ওরা আমাদের দেহে হাত সেঁকে, আর ওমের নেশায় কামনা করে আমাদের দীর্ঘ জীবন।“

“আয়না দর্শন ও ব্ল্যাক প্রতিবিম্ব” কবিতাটি সমকালীন বিপর্যয়ী বৈশ্বিক বিপর্যয়করতার বিভ্রমিত, ধ্বস্ত চিত্রায়ন। 
“আজকাল আমাদের বিশ্ববাজারে মৃত্যুর হাট বসে। বেচাকেনা হয় নানা ধরণের মৃত্যু।মাঝে মধ্যে যখন ডিসকাউন্ট রেট নেমে আসে বাজারে-জমে ওঠে আড়ত----------------------------।“

“তোমার কানের রিং-এ ঝুলে থাকে রোমান্টিক বিকেল” চিত্রময়তায় দুল্যমান সোনালি অনুভবের জারিত সুন্দরতা- 
“তোমার কানের রিং-এ যখন ঝুলে থাকে এই রোম্যান্টিক বিকেল, রাতেরা জেগে ওঠে। আর নিশিগন্ধা মেলে ধরে তার বসন ।--------------------------------------------------
---------এখন তোমার চোখের ঝিলে ফোটা পদ্মের সাথে চাঁদ নয়; আমাদের মিতালি ফটোকপি হয় অন্তর্জালে। আর আমি তোমার সিঁথির ফ্রন্টগার্ডেনে বসে বসে কামনা করি পৃথিবীর দীর্ঘায়তা।“

জটিল গ্রন্থিময় যাপিত জীবনানুষঙ্গের অমিত শক্তিময় নির্মিতি“দূরবর্তী অ্যাপেল শহর ও একটি দুর্বোধ্য আসন” কবিতাটি- 
“মানববন্ধন শেষে আমাদের প্রতিবাদগুলো বাজেয়াপ্ত হয়ে গেলে সারারাত সেলফায়িত সুখ আমাদের পেঁচিয়ে রাখে। আর বিশ্বের ফ্লাওয়ার এক্সিবিশন থেকে কিছু খুশবু ফটোকপি করে এনে আমরা ছিটিয়ে দেই সম্পাদকীয় বিছানায়-------------------------------------------।“

বাণিজ্য আধিকারিকের আধিপত্য এবং বিশ্ব বাজার অর্থনীতির ভারসাম্যহীন প্রপীড়ন’এর অসাধারণ চিত্রকল্পময় উপস্থাপন  “জন্ম এবং মোহের বিকল্প মমতা”
“গলা কেটে আমাদের হত্যা করা হলে বিজ্ঞাপনী সংস্থাগুলো বিজি হয়ে ওঠে। হকারের কণ্ঠ বেয়ে বেয়ে নামে হেডলাইনগুলো।-------------------------------------
-----আমাদের কনফিডেনশিয়াল ফাইল বাজেয়াপ্ত হয়ে যায়। ------------
আমাদের মুন্ডুহীন দেহ বেয়ে বেয়ে নামে জন্মঋণ-------------------------------।“

“একটুকরো ওপেন সিক্রেট সময়ের প্রিন্ট কপি” সমকালীন অঋদ্ধ যুগযন্ত্রণার বাস্তবতায় বৈরি সরিসৃপের আগ্রাসী লোভাতুরতার প্রেক্ষাপটে নির্মিত নৈর্বক্তিক কবিতা। 
“এরপর মায়ের হাতে চুড়ির শব্দ মরে যায়। আমাদের পৃথিবী অন্ধকার হয়ে আসে। আর, মা মৃত রাস্তার ভিতর দিয়ে হাঁটতে থাকেন।-----------------------------
---------নবজাতকের মতো আমাদের দেহ কাঁপতে থাকে। আর আমরা ভুলে যাই মায়ের মুখচ্ছবি। আমরা ভুলে যাই আমাদের দেহে ডানা গজানোর গল্প।“

“সার্পনার ও একটি পরত্যক্ত জ্যামিতি বক্স” আর একটি চিত্রকল্পময় গভীর সংবেদী কবিতা। 
“------------------------------------------সার্পনার আর জ্যামিতি বক্স নাড়াচাড়া করতে করতে যখন শেষদিগন্তে সূর্যোদয় হয়; তখন মনে হয় আসলেই, পৃথিবী বেঁচে রয় আমাদের বিশ্বাসের ভেতর।“

অর্থনীতির আগ্রাসী অমানবিকতা আর শোষন বঞ্চনা প্রপীড়িত পৃথিবীতে  ধন-ভিত্তিক অর্থনীতি এবং এর অনিবার্য অনুষঙ্গে বিভাজিত সমাজের ধনবৈষম্যের প্রেক্ষিতে এক অসামান্য উপস্থাপন “ওয়ালেট” কবিতাটি। 
“ওয়ালেটের ভেতর থেকে যখন নেমে এলো স্বপ্নগুলো; তখনো আমার জানা ছিল না জীবনের মানে।------এখন আমার কাছে দুধরাজ সাপের স্কিন দিয়ে তৈরি একটি চেঁড়া ওয়ালেট আছে। ভেতরে জমা আছে কিছু গলাধাক্কা আর পায়ে পিষ্ট মৃত্যু।”

“অ্যাপস এবং আমরা” প্রযুক্তি ও মানবিক অনুভবের সংশ্লেষ ও বিশ্লেষের ছান্দসিক নির্মিতি। 
“আমরা এন্ড্রয়েড ফোন থেকে কিছু আনন্দ ডাউনলোড করে ইমেইল করি দেহের ভেতর। আর আমরা সামাজিক হয়ে উঠি। আমাদের বুকের জমিন গেড়ে ভিনদেশি পতাকার খুঁটি আন্তর্জাতিক হই।---------------------------------------------------------------------------------
------আমরা জংলি হয়ে উঠি। আমরা মানুষ হত্যা করে পবিত্র হই। রক্ত পান করি ক্রানবেরি জুসের মতো।  ধীরে ধীরে আমাদের রং ফ্যাকাশে হতে থাকে। আমরা একসময় এক্সপায়ারড হয়ে যাই-----------------------।“

“ব্রাকেটবন্দী পুতুলের বিলাপ” নৈবর্ক্তিক চেতনাজাত রূপাকাশ্রয়ী কবিতা। 
“ প্যারাসিটামল খেতে খেতে এই দেহে আর কোনও অ্যাকশন কিংবা রিঅ্যাকশন হয় না। তাই আজকাল ফেনসিডিল প্যান্টের পকেটে ঢেলে শিশিগুলোই চিবিয়ে চিবিয়ে খাই। ভোরে ঝাপসা চোখে দেখি ফ্লোর জুড়ে কালচেরং রক্ত।-----------------------------------------------।“

গ্রাম শহরের বিভাজন, আগ্রাসী বিস্তারমানতায় গ্রামীন শুদ্ধ চরিত্রের স্খলন এবং অনিবার্যতায় কলুষাচ্ছন্নতার ব্যাপক বিস্তৃতির প্রেক্ষিতে সুমিত উপস্থাপন “আমাদের দুঃখ ওড়ে শহরে শহরে”
“আমাদের দুঃখ, মুখে মুখে ওড়ে। শহরে শহরে ঘুরে। বিকাশ হয় গ্রাম থেকে গ্রামে। আমাদের মা ছেঁড়া আঁচলে মুখ গুঁজে প্রার্থনা করেন, আমাদের দুঃখ লাঘবের। দিনদুপুরে সে প্রার্থনা হাইজ্যাক হয়ে যায়।----------------------------------------------------------------------------------
------আমাদের মায়ের ভেতর থেকে নেমে আসে আদম হাওয়ার কঙ্কাল। আর আমরা সবকিছু ভুলে টুলে ফের ঢুকে পড়ি সেই কঙ্কালের ভেতর।---এখন আমার আর কঙ্কালের মধ্যে কোন ডিফারেন্স নেই।“

“কালের জলে ভাসমান চোখ” ধ্রুপদী বিন্যাসের হিরন্ময় বোধের অমিত উচ্চারণ। 
“পিতামহের খুলে দেয়া চোখ দুটো বাবার পকেট থেকে পড়ে গেলে, আমি বাবার খুলে দেয়া একটি চোখ বুকপকেটে রেখে সাগরপাড়ে এসে দাঁড়াই। সাগরের উত্তালনাভি ভেঙে পালিত হাঙর কেড়ে নিয়ে যায় সেই চোখ।----------------------------------------------।“

“জীবনছায়ায়, জন্মফলকের আত্মসমর্পণ” আর একটি মানবানুভব ঋদ্ধ অন্তর গভীর সংবেদনার উপস্থাপন। 
“যখন জীবনের সঠিক স্পেলিং আমাদের বেলায় শর্টকাট হয়ে যায়, আমাদের বুকের ভেতর স্পষ্ট হতে থাকে খুরের আওয়াজ। চোখ দিয়ে বের হয়ে যায় সবগুলো ঘোড়া। শহরের দিকে। আমরা ডিকশনারাতি হাতে নিয়ে দৌড়াতে থাকি ইউনিভার্সিটির দিকে---------------------------------।“

স্খলন প্রপীড়িত অনন্দ্য সমাজের পঁচন ক্লিষ্টতার চিত্রায়ন “দিনমণির আঁধারতলে ভাঙে নাবালক জীবন” কবিতাটি। 
“আমাদের দেহ হাত-পা মাথা; পড়ে থাকে রেললাইনে। আমাদের দেহ, মুন্ডু বিচ্ছিন্ন করে দেয় ধারালো কিরিচ। আমাদের ঘরে ঘরে মাতম হয়। আর আমরা সেমাই’র খুশবুতে খুঁজি ঈদের আনন্দ---------------------------------------------------------।“

“পিডিএফ ফাইলে, জীবনের জলছাপ” প্রযুক্তি উৎকর্ষতায় বন্দী মানবানুভবের নাভিশ্বাসের গীতল চিত্রায়ন। 
“একদিন অকস্মাৎ বৃষ্টির সাথে আমাদের ঘরে নেমে এলো আলুরঙ আলো। আর মা সেই আলো দু’হাতে ধরে ঢেলে দিয়ে জলাক্ত উনুনে পুড়তে লাগলেন নিজস্ব পাঁজরের আগুনে। যে আগুনে মা প্রতিদিন একবার সেদ্ধ করেন সংসারের হাড্ডি-----------------------------------।

বিশ্লেষিত আত্ম অনুভবের জারিত বোধের সংশ্লেষিত প্রকাশ “টু বি কনটিনিউড” কবিতায়। 
“আমাদের জন্মগুলো আগুনের ফাতরামিডানা ভেঙে, পুড়ে পুড়ে কাবাব হয়। আমরা সেই কাবাব সিঁড়িতে বসে চুপচাপ খাই। আমাদের চোখ থেকে গড়িয়ে গড়িয়ে নামে জল। আমাদের তেষ্টা লাগে না। আমাদের চোখের ভেতর নদী বহে---------------------------------------------।“

ভিন্ন আঙ্গিকের কয়েকটি কবিতা আলোচনা করা যেতে পারে। ছোট পরিসরে বৃহত্তর জীবনবোধ ও জীবনচেতনার জলছবি আঁকা হয়েছে নিম্নোক্ত কয়েকটি কবিতায়। সিঁড়ি; কাগজের ফুল; লোডশেডিং; মাইলফলক জীবন; বিগত জন্মস্টাটাস –এমনই কয়েকটি কবিতা। কবিতাসমূহের নির্বাচিত কয়েকটি পংক্তি উদ্ধৃত করা হলো। 
১/“সিঁড়ি”
ওয়েস্টিন কিংবা রেডিসন ব্লু’র
দরজা খুলে নেমে আসে 
শত শত শ্যাডো
বুকের ছাদে আমার ডিজে পার্টি।
ফরাসি শ্বাসে গন্ধ্যে 
মাতাল আমি
জোছনার গ্রিল ভেঙে
শ্যাডোর নাভিতে
ঠোঁটের বেলিড্যান্স-------------------------------------।“

২/ “কাগজের ফুল”
“চোখের টবে
স্বপ্নগুলো কাঁচ
ডাবল ডেকার ঢেউ
ভেতরে
সমুদ্র
ডাইনিং টেবিল
শূন্য গ্লাস
কাঁচ ভাঙে
আমি ভাঙি
আসলে দোলনা হচ্ছে
দাবা অথবা মৃত্যু প্রতিযোগিতার 
বেস্ট প্লেইস।“

৩/ “লোডশেডিং”
“পকেটের ভেতর থেকে 
উঠে এলে দীর্ঘশ্বাস
তিন টুকরো ইটের চুলোয়
খড়ের আগুনে পুড়ে দৃষ্টিগুলো।
আর চামড়ার ভেতর শুরু হয়
শুকনো হাড্ডির ঝটিকা মিছিল।---------------------------।“

৪/ “মাইলফলক জীবন”
“গ্রামগুলো ঢুকে যাচ্ছে শহরের পকেটে।
আর আমি গ্রামের অন্ধকার মেখে
দাঁড়িয়ে থাকি মাইলফলকের মতো।----------------------------------।“

৫/“বিগত জন্মস্ট্যাটাস”
“রাত গভীর হলে
বুকের প্যাকেট খুলে বেরিয়ে আসে
নিষিদ্ধ ফল
ফলগুলো মাইক্রোওয়েভে সেদ্ধ হচ্ছে।----------------
--এখন নিষিদ্ধ গাছের-
চামড়ায় মোড়া আমার আঙ্গুল
কী-বোর্ড মাথাকুটে; আর
আকাশ নেমে এলে
টেবিলের ওপর; তারা ভেঙে
ফ্লাশ করে, বিগত জন্মের স্ট্যাটাস।“

গ্রন্থভূক্ত অনালোচিত কয়েকটি কবিতার নাম উল্লেখ করা হলো। ধ্রুপদি চারিত্র্যের এইসব কবিতার কোনটি গীতল, কোনটি নৈব্যর্ক্তিক, কোনটি রূপকাশ্রয়ী, কোনটি প্রতীকি ব্যাঞ্জণায় উজ্জ্বল। সুপাঠ্য বিবেচিত হওয়ায় কবিতাগুলির শিরোনাম উল্লেখ করা হলো। 

অন্যান্য অত্যাধুনিক ফর্মের কবিতা- 
একটি আনকাট নিজস্ব কম্বিনেশন;কালোফিতার আড়ালে, আজকাল;ট্যাম্বারিন ঝংকারে জ্বলে যে জীবন;বৃত্ত পেরিয়ে যখন ছায়ারা হাঁটে;ডালির চোখে আকাশ দ্যাখা;রংধনু কিংবা সাদাকালো ওয়াল;রাতের পরাগায়ন;লালরং রাত;মানুষ;দিগন্তরেখা থেকে বিচ্যুত লন্ঠন;একটি পাঠ প্রতিক্রিয়া;আন্তর্জাতিক বাজারে আমরা;বিগত মেমোরি;নগ্ন দেওয়ালের গভীরে;জনম;জলের নখ কিংবা আয়না বিভ্রাট;ফকই ও অন্যান্য;দহনের পরকীয়া;ববিন আর জীবন;জলমুখী পদচিহ্ন;সভাকক্ষটিতে আমাদের ভাগ ছিল; একটি নিজস্ব গল্প ও অন্যান্য;সংকেত ও অরণ্য;সুইসাইড নোট;বুকের পংক্তি থেকে খসে পড়ে বর্ণ;কবিতার ফুটস্টেপ;হোয়াইটক্রাইম ও আশ্চর্যবোধক চিহ্ন;দৃষ্টি ও অন্যান্য;ব্যারিকেড ভেঙে নামে যে বীজ;আমি ও প্রতি-জন্ম;জোছনা পালানো সময়ের গল্প; ক্রম; পৃথিবী ও ট্রেনের আত্মহত্মা;সাফরন ওয়ালডেনের ভূত ও বন্ধুদের গল্প;খুশবায়িত হাসের ভেতর, অন্ধকারপর্ব;

কবি এ এক এম আব্দুল্লাহ’র কবিতায় উত্তর আধুনিক কবিতা নির্মাণ প্রয়াস লক্ষণীয়। আধুনিক প্রযুক্তির বিকাশ এবং যাপিত জীবনে এর অপরিহার্য প্রবেশ-অনুপ্রবেশ তার যাবতীয় অনুষঙ্গ, ক্রিয়া, প্রতিক্রিয়া এবং পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নিয়ে আমাদের নিত্য প্রাত্যহিকে অস্তিত্বমান। এই বাস্তবতা সর্বব্যাপী। উন্নত বিশ্বের পরিধি ছাড়িয়ে আমাদের মত প্রযুক্তিতে দ্রুত উন্নয়নগামী দেশেও এর প্রভাব এবং প্রবেশ-অনুপ্রবেশের বাস্তবতা আদৌ উপেক্ষণীয় নয়। কবিতা ক্ষেত্রেও এর ছাপ পড়বেই। প্রত্যক্ষে কখনো, কখনো অদৃশ্য জলছাপে। কবি আব্দুল্লাহ’র কবিতায় কোনরকম আড়াল বা ধ্রুপদী প্রয়াস ছাড়াই সরাসরি প্রযুক্তি ও জীবনাচারের মিথস্ক্রিয়া উপস্থাপন করা হয়েছে। কবি নিজে প্রযুক্তিতে অগ্রসর দেশ যুক্তরাজ্যে দীর্ঘ প্রবাসে। সচেতনে এবং অবচেতনে এই প্রভাব বিমুক্তি সম্ভব হয়নি তার পক্ষে। অথবা হতে পারে সচেতনাতেই তিনি প্রযুক্তি বিধৌত নব আঙ্গিকের কবিতাধারা নির্মাণে প্রয়াসী হয়েছেন।

এই প্রয়াসে শতভাগ সফল তিনি কিনা, অথবা বোদ্ধা পাঠকের কাছে এর আবেদন সাগ্রহে আদরনীয় হবে কিনা, অথবা কবিতার মৌল আকর্ষণের সাথে এই প্রয়াসের সাংঘর্ষিকতা বিষয়ক দ্বন্দ্বমানতা দেখা দেবে কিনা, অথবা রূঢ় প্রত্যাখ্যানে এবম্বিধ উদ্যোগকে প্রত্যাখ্যানে কেউ কেউ ব্রতী হবেন কিনা এখনই সে বিষয়ে মন্তব্য করা যাচ্ছেনা। করা সমীচিনও হবেনা।

সাহিত্য, সংস্কৃতি, শিল্পের সকল শাখা-প্রশাখার মত কবিতাও চলিষ্ণু, গতিময়। তাই আবেষ্টনিক প্রয়াস বা রীতিবদ্ধতার রায় চূড়ান্তভাবে দেওয়ার ধিকার কারো একক বা গোষ্ঠিগত হতে পারে না। দেশজ ভৌগলিক পরিসীমা বা নির্দিষ্ট ভাষিক গন্ডীতে আবদ্ধকরণ প্রয়াসও যৌক্তিক না হওয়ারই কথা। সেই হিসেবে নিরীক্ষাধর্মী এই নির্মাণ প্রয়াসকে প্রত্যাখ্যান করার বাস্তবতা নেই।

পাশাপাশি এটাও স্মর্তব্য, সর্বপাঠকের গ্রহণীয় ও বোধগম্যতার বিষয়টিও উপেক্ষণীয় নয়। কেবলমাত্র স্বীকৃত বোদ্ধা, বুদ্ধিজীবী বা কবি-পাঠকদের কাছে পাঠ-সীমিতকরণ যৌক্তিক কিনা এটাও বিচার্য। জনমানুষের কাছে বোদ্ধ, গ্রহন্য না হতে পারলেও অন্তত কবিতা প্রেমীদের বোধের দরোজা অর্গলাবদ্ধ না করাই বাঞ্ছনীয়। কাব্যগ্রন্থটির ব্যাপক সংখ্যাগরিষ্ট কবিতায় আধুনিক প্রযুক্তি, বিশেষত যোগাযোগ প্রযুক্তি এবং আনুষঙ্গিক যন্ত্রাদির উপকরণ, যন্ত্রাংশ এবং সংলগ্ন-সংশ্লিষ্ট শব্দ ইত্যাকার বিষয় ব্যাপক ব্যবহৃত। এতে সাধারণ কবিতা পাঠক এবং ইলেকট্রনিক যন্ত্র-জ্ঞান স্বল্প পাঠকের কাছে এসবের আবেদন ও বোধগম্যতা এবং অপরিহার্যভাবেই আদরণীয়তা হ্রাসের আশঙ্কা থেকেই যায়। কবি এ বিষয়টি ভেবে দেখতে পারেন। আঙ্গিক পরিবর্তন না করেও বোধগম্যতার বিষয়টি বিবেচনার্হ মনে করি।

কাব্যগ্রন্থটিতে কবি নির্মলেন্দু গুণের শুভেচ্ছাবাণী গ্রন্থের মর্যাদা বৃদ্ধি করেছে। কবি এ কে  আব্দুল্লাহ’র “ ই মেইল বডিতে সময়ের অনুবাদ” সুনির্মিত কাব্যগ্রন্থ। কাব্যগ্রন্থটির প্রচ্ছদ আরও একটু আকর্ষণীয় হতে পারতো। এমন একটি সমৃদ্ধ কাব্যগ্রন্থের মুদ্রণ ও প্রকাশনায় অধিকতর যত্নবান হওয়া বাঞ্ছনীয় ছিলো। প্রচুর সংখ্যক মুদ্রণ প্রমাদ পাঠককে পীড়িত করবে। কাগজের মান ও বাঁধাই সন্তোষজনক। আমি কাব্যগ্রন্থটির বহুল পঠন ও পাঠকপ্রিয়তা কামনা করি। কবি এ কে এম আব্দুল্লাহ’ ক্রমোৎকর্ষে অধিকতর মানোন্নত কবিতা নির্মিতিতে নিবেদিত থাকবেন, এই প্রত্যাশা রইলো আমাদের।
--------------------------------------

লালমাটিয়া, ঢাকাঃ মে ১২, ২০২২ 

Saturday 26 March 2022

কবি ও সাহিত্যিক এ.কে.এম আব্দুল্লাহর জন্মদিন আজ

কবি ও সাহিত্যিক এ.কে.এম আব্দুল্লাহর জন্মদিন আজ


গোলাপগঞ্জের কুশিয়ারা পাড়ের কৃতি সন্তান, কুশিয়ারা নিউজের উপদেষ্টা, যুক্তরাজ্য প্রবাসী, কবি ও সাহিত্যিক এ.কে.এম আব্দুল্লাহ’র জন্মদিন আজ। ১৯৭০ সালের এই দিনে গোলাপগঞ্জের বুধবারীবাজার ইউনিয়নের বনগ্রামে জন্মগ্রহণ করেন কবি এ.কে.এম আব্দুল্লাহ। তাঁর পিতা মরহুম ক্বারী মোহাম্মদ ছুরাব আলী, মাতা মরহুমা ফাতিরা খাতুন। তিনভাই ও তিন বোনের মধ্যে কনিষ্ঠ সন্তান তিনি।

কবি ও কথা সাহিত্যিক এ কে এম আব্দুল্লাহ ১৯৯২সাল থেকে যুক্তরাজ্যের লন্ডনে বসবাস করছেন। প্রবাসী এ কবি, গদ্যকার  দীর্ঘদিন থেকে যুক্তরাজ্যে অবস্থান করলেও নিজেকে বাংলা সাহিত্য চর্চায় নিয়োজিত রেখেছেন নিয়মিত। বিভিন্ন প্রকাশনা সংস্থা থেকে প্রকাশিত হয়েছে তাঁর লেখা কবিতা,উপন্যাস ও গল্পগ্রন্থ। রয়েছে বেশ কিছু যৌথ প্রকাশনা। ইংরেজিতে অনুবাদ কবিতা প্রকাশিত হয়েছে বিভিন্ন সংকলনে।  এছাড়াও তিনি সফলভাবে সম্পাদনা করছেন অণুগল্প সংকলন ‘শব্দবিন্দু’ ও ড্যাশ-অনলাইন ম্যাগাজিনসহ বিভিন্ন লিটলম্যাগ। এ কে এম আব্দুল্লাহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পত্রিকা, অনলাইন সাহিত্য পত্রিকা , সাহিত্য ব্লগ, লিটলম্যাগসহ বিভিন্ন মাধ্যমে লিখে চলেছেন নিয়মিত।


কবির শিক্ষা জীবনঃ
কবি এ কে এম আব্দুল্লাহর লেখাপড়ার হাতেখড়ি হয় বাড়ির পাশের সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। প্রাথমিক শিক্ষা অর্জন শেষে তিনি স্থানীয় আল-এমদাদ হাইস্কুল এন্ড কলেজে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা লাভ করেন। এরপর সিলেট এম সি বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করে যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমান। 

সাহিত্য চর্চায় কবিঃ
কবি এ কে এম আব্দুল্লাহ কিশোর বয়সে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে লেখাপড়াকালীন থেকেই লেখা-লেখি শুরু করেন। তবে মধ্যে কিছুটা বিরতি শেষে প্রবাসে পাড়ি জমানোর পর শত ব্যস্ততায়ও নিজেকে সাহিত্য চর্চায় আবার নিয়োজিত করেন। তাঁর অসাধারণ লেখনীতে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে হয়েছেন ব্যাপক সমাদৃত। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পেয়েছেন বেশ কিছু সম্মাননা পুরষ্কারও।

তাঁর প্রকাশিত কবিতাগ্রন্থ — যে শহরে হারিয়ে ফেলেছি করোটি, ইমেল বডিতে সময়ের অনুবাদ, উপন্যাস ক্ষুধা ও সৌন্দর্য এবং টি ব্রেকের গল্প গল্পগ্রন্থ পাঠক মহলে ব্যাপক সমাদৃত হয়েছে। একইসাথে পাঠকের কাছে হয়েছে ব্যাপক প্রশংসিত। তাঁর লেখায় সমাজে ঘটেযাওয়া নানা ঘটনা তার উপলব্দিতে বাস্তবতাবোধের এক শৈল্পিক রুপ যেনো প্রকাশিত হয়। এ কে এম আব্দুল্লাহ’র লেখা পাঠকমনের খোরাক মিটিয়ে আনন্দ, চেতনাবোধ ও অনুপ্রাণিত করে তুলেছে পাঠকের মন। 

তাছাড়া তাঁর লেখা বইগুলোর উপর বেশ কিছু চমৎকার পাঠপ্রতিক্রিয়া প্রকাশিত হয়েছে জনপ্রিয় জাতীয় পত্রিকা ইত্তেফাক,দৈনিক জনকণ্ঠ, সিলেট বেতার, চ্যানেল আই অনলাইন, সাহিত্যবার্তা, কুশিয়ারা নিউজ,জলধি-সহ বিভিন্ন পত্রপত্রিকায়।

গ্রন্থাবলীঃ
এ কে এম আব্দুল্লাহ’র প্রকাশিত কবিতাগ্রন্থসমূহের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে “ইমেইল বডিতে সময়ের অনুবাদ, সচেতনা, হৃদয়ে রক্তক্ষরণ, মাটির মাচায় দণ্ডিত প্রজাপতি, যে শহরে হারিয়ে ফেলেছি করোটি” প্রভৃতি।

তাঁর লেখা উপন্যাসসমূহের মধ্যে রয়েছে – ক্ষুধা ও সৌন্দর্য।
গল্পগ্রন্থের মধ্যে রয়েছে 'টি ব্রেকের গল্প'। 

সম্পাদনাঃ
কবি এ কে এম আব্দুল্লাহর সম্পাদনা ও প্রকাশনায় বাংলা ও ইংরেজি উভয় সংস্করণে ড্যাশ ওয়েব ম্যাগ ডটকম নামের একটি অনলাইন ম্যাগাজিন সাহিত্য অঙ্গনে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। যা মাসিক সংকলন নিয়ে অল্পদিনের মধ্যেই সাহিত্য অঙ্গনে সমাদৃত হতে সক্ষম হয়েছে। তাছাড়া কবি এ কে এম আব্দুল্লাহ সম্পাদনা করেন অণুগল্প সংকলন শব্দবিন্দু। 

সংগঠকঃ
এ কে এম আব্দুল্লাহ একজন সফল সংগঠক হিসেবেও বেশ সুনাম অর্জন করেছেন। তিনি প্রতাষ্ঠা করেছেন কবিতাস্বজন, পয়েট্রি ক্লাব ইউকে। সংহতি সাহিত্য পরিষদ,সম্মিলিত সাহিত্য পরিষদসহ বিভিন্ন সাহিত্য সংগঠনের সাথেও রয়েছেন সম্পৃক্ত। বর্তমানে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক পরিষদ ইউকে-এর কোষাধ্যক্ষের দায়িত্বে রয়েছেন তিনি।

এছাড়া তিনি শিক্ষার উন্নয়নের জন্য গঠিত সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলা এডুকেশন ট্রাস্ট ইউকের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে আল এমদাদ হাইস্কুল ও কলেজ এডুকেশন ট্রাস্টের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন।

পুরস্কারঃ
কবি তাঁর অসাধারণ লেখনীর জন্য ব্যাপক সমাদৃত হয়েছেন আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে। পেয়েছেন বেশ কিছু সম্মাননা পুরস্কার ও স্বর্ণ মেডেল। ২০১৯ইং সালের ০৩ জানুয়ারি কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের স্মৃতিবিজড়িত শান্তিনিকেতনের সৎসংঘ পাঠাগারের পক্ষ থেকে দক্ষিণ এশিয়ার সেরা দশটি বইয়ের লেখককে সম্মাননা এওয়ার্ড প্রদান করা হয়। এসময় বাংলাদেশের দুইজন লেখককে মনোনীত করে শান্তিনিকেতন সৎসংঘ পাঠাগার। এরমধ্যে কবি এ কে এম আব্দুল্লাহর লেখা কবিতাগ্রন্থ 'যে শহরে হারিয়ে ফেলেছি করোটি' বইটিকে সেরা মনোনীত করে কবিকে সম্মাননা এওয়ার্ডে ভূষিত করে শান্তিনিকেতন সৎসংঘ পাঠাগার। এছাড়া পেয়েছেন ভারতের রাজস্হানের ড.শ্যাম সুন্দর মেমোরিয়াল ট্রাস্টের (শতবছর পূর্তি পালন উপলক্ষে) পক্ষ থেকে ২৫ হাজার রুপি ও একটি স্বর্ণ মেডেল পুরস্কার। উল্লেখ্য এই সংগঠন প্রতিবছর সাহিত্যের বিভিন্ন শাখায় অবদানের জন্য এশিয়ার বিভিন্ন দেশের সাহিত্যিকদের এ পুরষ্কার দিয়ে থাকে। এছাড়া কবি আব্দুল্লাহ সাহিত্যেও পেয়েছেন বেশ কিছু সম্মাননা পুরষ্কার। কবির এ প্রাপ্তিতে যোগ হোক নতুন মাত্রা। জন্মদিনে কুশিয়ারা নিউজ পরিবারের পক্ষ থেকে কবির প্রতি অজস্র শুভেচ্ছা। 

Wednesday 16 March 2022

শতবর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নবাব স্যার সলিমুল্লাহ ও বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রসঙ্গ বইয়ের  মোড়ক উন্মোচন

শতবর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নবাব স্যার সলিমুল্লাহ ও বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রসঙ্গ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন


গত ১৪ মার্চ, সোমবার ছিল ঐতিহ্যবাহী কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদের পঞ্চদশ বই মেলার সমাপনী দিন। ঐদিন মেলায় ছিল লেখক পাঠক সহ বইপ্রেমীদের উপচে পড়া ভিড়। এমনই এক আনন্দঘন পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয় শতবর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নবাব স্যার সলিমুল্লাহ ও বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রসঙ্গ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠান ও আলোচনা সভা।
 
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের ছাত্রী বর্তমানে ভাদেশ্বর মহিলা কলেজের বাংলা বিভাগের অধ্যাপিকা, জয়ন্তী রানী চক্রবর্তীর সঞ্চালনায়, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বিভাগের উপ—পরিচালক ড. সালাহ উদ্দিন আহমদ এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠান ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও লিডিং ইউনিভার্সিটির ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. কাজী আজিজুল মাওলা।

প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন লেখক, গবেষক ও সংগঠক ড. সেলু বাসিত। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আরটিএম আল কবীর টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটির ফ্যাকাল্টি অব বিজনেস এন্ড ডেভলাপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ডীন অধ্যাপক ড. তোফায়েল আহমদ, লিডিং ইউনিভার্সিটির পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক ড. মোস্তাক আহমেদ, লিডিং ইউনিভার্সিটির সহকারী রেজিষ্ট্রার (্পিআর) মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন।

কবি ও সংগঠক কামাল আহমদের পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া আলোচনা সভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন লেখক, কলামিস্ট, গীতিকার বেলাল আহমদ চৌধুরী, বিশিষ্ট লেখক, গবেষক মাওলানা শামসীর হারুনুর রশিদ, কবি ও কাউন্সিলর নাজনীন আক্তার কনা, কবি ও ইঞ্জিনিয়ার মহিউদ্দিন চৌধুরী মহি, উপনস্যাসিক, গবেষক ও মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম, ছড়াকার তারেশ কান্তি তালুকদার, প্রভাষক মাহবুবুর রব নয়ন, কবি শাহ আব্দুস সালাম, কবি ও শিক্ষক লিলি বেগম, গীতিকার বাহা উদ্দিন বাহার প্রমুখ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক ড. কাজী আজিজুল মাওলা বলেন, বইটির লেখক মোঃ আব্দুল মালিক একটি ভালো কাজ করেছেন, তিনি একটি ভালো বই লিখেছেন, সময় উপযোগী বই লিখেছেন, বইটির মূল বিষয়ের বর্ণনা আরো বিস্তৃত হওয়ার প্রয়োজন ছিল। আগামী সংস্করণে বইটি আরো বড় আকারে, আরো তথ্য সমৃদ্ধ করে লেখক প্রকাশ করবেন লেখকের লেখনি অব্যাহত থাকবে। পাঠকরা তাঁর কাছ থেকে আরো মূল্যবান বই উপহার পাবেন এই প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন তিনি।

প্রধান বক্তা ড. সেলু বাসিত বলেন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার বিষয়ে ইতিবাচক বা নেতিবাচক কোন ভূমিকা নিয়েছেন এমন কোন লিখিত তথ্য পাওয়া যায় না। তিনি গড়ের মাঠের সভায় উপস্থিত ছিলেন না এ কথা সম্পূর্ণ সত্য। লেখক আব্দুল মালিক বিষয়টির স্বপক্ষে অনেক তথ্য সূত্র দিয়েছেন। আমি তাঁকে ধন্যবাদ জানাই।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক ড. তোফায়েল আহমদ বলেন, লেখক মোঃ আব্দুল মালিক উপযুক্ত সময়ে উপযুক্ত বইটি লিখেছেন। একজন স্পষ্টভাষী মানুষ; যা বিশ্বাস করেন তা অকপটে স্বীকার করেন। এ বইটি পাঠে পাঠকরা অনেক বিভ্রান্তি থেকে নিস্কৃতি পাবেন বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

অধ্যাপক ড. মোস্তাক আহমদ বলেন, বিষয়ের তুলনায় বইটির কলেবর অনেক ছোট হয়ে গেছে, আগামী সংস্করণে লেখক আরো বেশি তথ্য সমৃদ্ধ করে বইটি আরো বড় আকারে প্রকাশ করবেন বলে মত প্রকাশ করেন।

সভাপতির বক্তব্যে ড. সালাহ উদ্দিন আহমদ বলেন, শিক্ষক আব্দুল মালিক একটি গবেষণাধর্মী বই আমাদেরকে উপহার দিয়েছেন, তিনি নিয়মিত লিখে যাচ্ছেন, তাঁর কাছ থেকে আমরা আরো অনেক অনেক মূল্যবান বই উপহার পাবো সেই প্রত্যাশা ব্যক্ত করে অতিথিবৃন্দ ও সুধী মন্ডলীকে উপস্থিত হয়ে সভাকে সাফল্যমন্ডিত করার জন্য ধন্যবাদ জানান। 

বইটির লেখক মোঃ আব্দুল মালিক তাঁর অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে বলেন, প্রধান অতিথি, প্রধান বক্তা, বিশেষ অতিথিরা উপস্থিত হয়ে বইটির সম্পর্কে মূল্যবান বক্তব্য উপস্থাপনের জন্য তাঁদেরকে কৃতজ্ঞতার সহিত ধন্যবাদ জানান। এছাড়াও “সার্জন টিভি চ্যানেল” অনলাইনে অনুষ্ঠানটির সম্পূর্ণ লাইভ প্রচার করায় ও উপস্থিত সুধী মন্ডলীকে ধন্যবাদ জানান। 

Sunday 6 March 2022

মুজিববর্ষে শত কবিতায় বঙ্গবন্ধু বইয়ের মোড়ক উন্মোচন

মুজিববর্ষে শত কবিতায় বঙ্গবন্ধু বইয়ের মোড়ক উন্মোচন


মুজিববর্ষে দেশি-বিদেশি কবিদের কালজয়ী শত কবিতায় বঙ্গবন্ধু বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়ে‌ছে। লেখক, কলামিস্ট ও শিক্ষক আব্দুল মালিক সম্পাদিত বইটির মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠান শ‌নিবার (৫ মার্চ) সন্ধ্যায় বাংলা একাডেমির অমর একুশে বইমেলায় অনু‌ষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ড. নুহ-ই ইসলাম সেলু বাসিত। বিশেষ অতিথি ছিলেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. আহমেদ পারভেজ জাবীন, কবি নীপা চৌধুরী, অধ্যক্ষ খান আখতার হোসেন, কবি হাসনাইন সাজ্জাদী প্রমুখ।

বইটি প্রকাশ ক‌রে‌ছে সময়ের সুর প্রকাশনী।

Thursday 24 February 2022

ব্রিটিশ বিরোধী স্বদেশী ও পাকিস্তান আন্দোলনে বঙ্গবন্ধু  বইয়ের মোড়ক উন্মোচন

ব্রিটিশ বিরোধী স্বদেশী ও পাকিস্তান আন্দোলনে বঙ্গবন্ধু বইয়ের মোড়ক উন্মোচন


বঙ্গবন্ধু গবেষণা সংসদ সিলেট এর সাধারণ সম্পাদক, বঙ্গবন্ধু লেখক পরিষদ সিলেট এর সাবেক সহ-সভাপতি, লেখক ও কলামিস্ট আব্দুল মালিকের ৩য় গ্রন্থ “ব্রিটিশ বিরোধী স্বদেশী ও পাকিস্তান আন্দোলনে বঙ্গবন্ধু” বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়েছে। বুধবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় সিলেট নগরীর জিন্দাবাজারের নজরুল একাডেমিতে বইটির মোড়ক উন্মোচন করা হয়।

এ উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় বঙ্গবন্ধু লেখক পরিষদ সিলেট এর আহ্বায়ক, সিসিক কাউন্সিলর কবি নাজনীন আক্তার কনার সভাপতিত্বে ও জালালাবাদ এসোসিয়েশন যুক্তরাজ্য শাখার সাধারণ সম্পাদক, লন্ডন আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক আমিনুল হক জিলু ও বঙ্গবন্ধু লেখক পরিষদ সিলেট জেলা শাখার সদস্য সচিব কবি শহীদুল ইসলাম লিটনের যৌথ সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি, সাবেক সংসদ সদস্য আলহাজ¦ শফিকুর রহমান চৌধুরী।

প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের ল রির্ফম কমিশনের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট রুহুল আনাম চৌধুরী মিন্টু। 

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সংগ্রামী সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নাসির উদ্দিন খান, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আব্দুল বারী, লেখক-কলামিস্ট বেলাল আহমদ চৌধুরী, ভাদেশ্বর মহিলা কলেজের বাংলা বিভাগের অধ্যাপিকা জয়ন্তী রানী চক্রবর্তী, বঙ্গবন্ধু লেখক পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক ছড়াকার তারেশ কান্তি তালুকদার, সাবেক ব্যাংক কর্মকর্তা জ্যোর্তিময় দাশ যিশু, সিলেট বিভাগ গণদাবী ফোরাম সিলেট জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক, সিনিয়র সাংবাদিক চৌধুরী দেলোয়ার হোসেন জিলন, লন্ডন প্রবাসী কমিউনিটি নেতা বিলাল আহমদ প্রমুখ।

প্রধান অতিথি শফিকুর রহমান চৌধুরী তাঁর বক্তব্যে বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালি জাতি রাষ্ট্রের স্বপ্নদ্রষ্টা ও জনক। তিনি সারাজীবন নির্যাতিত নিপীড়িত মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য সংগ্রাম করে গেছেন। তাঁর জীবনের একেবারে শুরুতে মাত্র সপ্তম শ্রেণির ছাত্র থাকাবস্থায় তিনি ব্রিটিশ বিরোধী স্বদেশী ও পরে মুসলিম লীগ ও মুসলিম ছাত্রলীগের রাজনীতিতে সক্রিয় যোগদান করেন। যেখানেই মুসলিম লীগ, মুসলিম ছাত্রলীগ, সেখানেই শেখ মুজিব। হিন্দু—মুসলিম দাঙ্গা দমনেও তিনি মহাত্মা গান্ধী, তাঁর রাজনৈতিক গুরু হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর সঙ্গে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করেছেন। বঙ্গবন্ধুর সেই অবদানের কথা তেমন আলোচনা হয় না। লেখক আব্দুল মালিক একজন গবেষকের অন্তর্দৃষ্টি নিয়ে বইটি লিখেছেন, আমি তাকে সাধুবাদ জানাই, অভিনন্দন জানাই। বইটি পাঠে পাঠকরা ইতিহাসের অনেক অজানা তথ্য জানতে পারবেন বলেও জানিয়ে তিনি বইটির বহুল প্রচার কামনা করেন।

প্রধান অতিথি বঙ্গবন্ধুসহ ১৫ আগস্টের সকল শহীদান, ভাষা আন্দোলন ও মহান মুক্তিযুদ্ধের ৩০ লক্ষ বীর শহীদানের আত্মার মাগফেরাত ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করেন। 

প্রধান বক্তা ও বিশেষ অতিথিবৃন্দ তাঁদের বক্তব্যে বঙ্গবন্ধুর জীবনের বিভিন্ন দিক, উন্মোচিত বই ও বইয়ের লেখক সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেন। তাঁরাও বইটির বহুল প্রচার, লেখকের সাফল্য, ভাষা শহীদ, মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদান ও ১৫ আগস্টের শহীদানদের রুহের মাগফেরাত ও জান্নাতুল ফেরদৌস কামনা করেন।

লেখক আব্দুল মালিক তাঁর অনুভূতি প্রকাশ করে সভায় উপস্থিত সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন ও ধন্যবাদ জানান। 

Monday 7 February 2022

প্রকাশিত হলো— কবি এ.কে.এম আব্দুল্লাহর নতুন কবিতার বই ‘শাজরাতকাঠের ক্যারাভ্যান ও আত্মার ফ্লেক্সিলোড’

প্রকাশিত হলো— কবি এ.কে.এম আব্দুল্লাহর নতুন কবিতার বই ‘শাজরাতকাঠের ক্যারাভ্যান ও আত্মার ফ্লেক্সিলোড’


যে শহরে হারিয়ে ফেলেছি করোটি, ইমেইল বডিতে সময়ের অনুবাদ কবিতাগ্রন্থের সাফল্যের দুবছর পর প্রকাশিত হল কবি, গল্পকার এ কে এম আব্দুল্লাহর নিজস্ব ধারার নতুন কবিতার বই ‘শাজরাতকাঠের ক্যারাভ্যান ও আত্মার ফ্লেক্সিলোড’।  

বইটি ২০২২ এর মহান একুশের গ্রন্থমেলায় অনার্য প্রকাশনীর স্টলে পাওয়া যাবে। এছাড়া রকমরারী-সহ বিভিন্ন লাইব্রেরিতেও পাওয়া যাবে। বইটি প্রকাশ করেছে অনার্য প্রকাশনী। 

উল্লেখ্য, কবি এ কে এম আব্দুল্লাহ ইতোমধ্যে কবিতায় তৈরী করেছেন তার এক নিজস্ব ধারা। যা পাঠকসমাজে বেশ প্রশংসিত হচ্ছে। আধুনিতায় ভরপুর প্রতিটি লাইন পাঠককে কৌতূহলী করার পাশাপাশি নিয়ে যায় এক ব্যাকুল ভাবনার রাজ্যে।নতুন এবং ভিন্ন স্বাদের তাঁর এ বইটিও পাঠক নন্দিত হবে বলেই প্রত্যাশা।

Sunday 26 September 2021

কবিতাঃ শৈশব কাল, এম.জেড.সায়েম

কবিতাঃ শৈশব কাল, এম.জেড.সায়েম



শৈশব কাল
এম,জেড,সায়েম

আমার ছোট্ট বেলা!
কত না দুষ্টুমিতে ভরা
কত না স্কুল কামাই করা, 
সবকিছু ফাঁকি দিয়ে মাঠে খেলা
নয়তোবা, ছোট্ট খালে মাছ ধরা,
আমার ছোট্টবেলা দুষ্টুমিতে ভরা।

কতনা ছিল কথার ফুলঝুরি,
খেলতাম তখন লুকোচুরি
আম কুড়াতে সকাল পার,
সকলে মিলে করতাম ফালাহার।

বর্ষায় নদীর অথৈই জলে
সাঁতার কাটতাম খেলাচ্ছলে,
লাই,কানামাছি আর গোল্লারছুট 
আরও কত্ত যে স্মৃতিরপট

চলে যেত দিন, ফিরতাম ঘর গোধুলি বেলায়
দুষ্টমিষ্ট দিন আজ হারিয়েছে হেলায়,
আক্ষেপ আর স্বাদ নিয়ে ভাবি
আহ! আমার সেই ছোট্ট বেলা..!

Wednesday 21 July 2021

শৈশবের ঈদঃ জাহিদ উদ্দিন

শৈশবের ঈদঃ জাহিদ উদ্দিন

ঈদ মানেই আমেজ, ঈদ মানেই খুশি
ঈদ মানেই জড়িয়ে থাকা শৈশবের কিছু স্মৃতি।
আর হ্যা এই ঈদের সাথে শৈশব-কৈশোরের নানাবিধ আবেগ, অনুভূতি আর স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে।  শৈশবের আবেগ আর অনুভূতির বিরাট একটা অংশ জুড়ে থাকা ঈদের দিনের স্মৃতি নিয়ে লিখেছেন সাংবাদিক জাহিদ উদ্দিন।



শৈশবের ঈদ
জাহিদ উদ্দিন


ছোট বেলার ঈদের আনন্দ এখন আর নেই। ঈদ আসার আগ থেকেই শুরু হয়ে যেত ঈদের প্রস্তুতি। মাকে বুঝিয়ে ঈদের জামা কেনা, ঈদের জন্য টাকা জমিয়ে রাখা এসব ছোট খাটো অনূভুতিগুলো এখন কেবলই স্মৃতি।  


ঈদের দিন রাতে কি যে আনন্দ হত, বলে বুঝানোর ভাষা নেই। ওইদিন কোনভাবেই ঘুমাতে পারতাম না, সারা রাত জেগেই কাটিয়ে দিতাম। ইমাম সাহেব যখন মসজিদে ফজরের আজান দিতেন তখন প্রতিযোগিতা করে গোসল করতে চলে যেতাম, কার আগে কে গোসল করবে। গোসল শেষ হলে শুরু হতো ঈদের সালামী ভাগিয়ে নেওয়ার প্রতিযোগিত৷ যখন সালাম দিয়ে বড়দের কাছে ঈদের সালামী পেতাম তখন কি যে আনন্দ লাগতো। নতুন জামা কাপড় পড়ে লাচ্ছি সেমাই খেয়ে জায়নামাজ হাতে নিয়ে যখন ঈদের নামাজ পড়তে যেতাম, তখন মনে আনন্দের বন্যা ভয়ে যেত। নামাজ শেষে কোলাকুলি, মোসাফা ঈদের আনন্দ আরো বাড়িয়ে দিতো। ছোট্ট বন্ধু আরেক ছোট্ট বন্ধুর কাধে কাধ মিলিয়ে যখন কোলাকুলি করতো এ-ই দৃশ্য অন্যরকম। 


কোরবানির জন্য যে পশুটা কিনে আনা হত বাড়িতে যতদিন থাকতো ওর প্রতি অন্যরকম এক ভালবাসা তৈরী হয়ে যেত। নিজে বাড়িতে থাকার সুবাদে যখনি সময় পেতাম ওই পশুটির জন্য গাছের পাতা নিয়ে আসতাম। এনে নিজ হাতে খাইয়ে দিতাম আর অবাক চোখে তাকিয়ে থাকতাম কিভাবে খায় দেখার জন্য। যখন ওই পশুটি কোরবানী দিয়ে দেওয়া হত অনেক কষ্ট লাগতো, অজান্তে চোখে জল এসে যেত। অল্পদিনে ওর প্রতি একটা ভালবাসা জন্ম হয়ে যেত। 

 

ঈদের নামাজ ও কোরবানি শেষে সকলে মিলে হৈ-হুল্লোড় আর বাদ ভাঙ্গা আনন্দ এখন ঈদে খুঁজে পাইনা। ঈদ এলে ইচ্ছে করে সেই ছোট বেলায় ফিরে যেতে। সময়ের ব্যবধানে ছোটবেলা হাঁরিয়ে ফেলেছি, এখন কেবল স্মৃতি। এই ভালবাসার দিনগুলো আর ফিরে আসবেনা আমার জীবনে।  দিন যতই যাচ্ছে বাড়ছে যান্ত্রিকতা, বাড়ছে ব্যস্ততা। এখনো ছোটবেলার ঈদের স্মৃতিগুলো মনে পড়লে ইচ্ছে করে চিৎকার করে কাঁদি।


লেখক
সাংবাদিক জাহিদ উদ্দিন
প্রধান সম্পাদক
Gvoice24.com

ব্রিটেনে ঈদঃ হাসনাত মুহ: আনোয়ার

ব্রিটেনে ঈদঃ হাসনাত মুহ: আনোয়ার

করোনাকালীন চতুর্থ ঈদ উদযাপন করলেন বিশ্বের মুসলিম উম্মাহ। গতকাল (২০ জুলাই) সৌদি আরব, ব্রিটেন-সহ বিশ্বের বেশ কিছু দেশে পবিত্র ঈদুল আযহা উদযাপিত হয়েছে। আর আজ (২১ জুলাই) বাংলাদেশ, ভারত-সহ আরোও কিছু দেশে ঈদুল আযহা উদযাপিত হচ্ছে। মুসলিম উম্মাহর সবচেয়ে বড় দুই ধর্মীয় অনুষ্ঠান হচ্ছে পবিত্র ঈদুল ফিতর এবং ঈদুল আযহা। এ দুই ধর্মীয় অনুষ্ঠানকে ঘিরে মুসলিমদের মাঝে থাকে আনন্দ আর খুশির আমেজ। তবে এই খুশির অনুষ্ঠান একেক দেশে একেকভাবে পালিত হয়। কাকন ফকির নামে বহুল পরিচিত হাসনাত মুহাম্মদ আনোয়ার লিখেছেন ব্রিটেনের ঈদের আমেজ উদযাপনের ইতিকথা....


ব্রিটেনে ঈদ
হাসনাত মুহ: আনোয়ার 


ঈদ উপলক্ষে বৃটেনে বাংলাদেশের মত সাজ সাজ রব হয়না। স্বদেশ অর্থাৎ বাংলাদেশে যদিও আমরা সংখ্যাগুরু কিন্তু এখানে সংখ্যালঘু অর্থাৎ মাইনরিটি। জনসংখ্যার হিসেবে মাত্র শতকরা দশজন মুসলিম এদেশে বাস করেন। দোকানপাটে কেনাবেচা প্রচুর হলেও দোকান গুলোর সাজসজ্জা বা ডেকোরেশন ও বিজ্ঞাপনে ঈদের উপস্থিতি এতদিন তেমন ছিলনা বললেই চলে। ঈদ উপলক্ষে মূল্যহ্রাস, বিরাট ছাড় .. ইত্যাদি খুব একটা চোখে পড়তো না। হ্যাঁ, মুসলীম বা এশীয় দোকানগুলোতে এর প্রভাব পড়ে বৈকি, কিন্তু মূলধারা বা মেইনস্ট্রীম শপিংমল গুলোতে খুব একটা সাড়া পাওয়া যেতোনা। 


আনন্দের কথা, গত ক’বছর ধরে আস্তে আস্তে লন্ডন ও এর বাইরের শহর গুলোতেও ঈদ উপলক্ষে এর ছাপ পড়তে শুরু করেছে। স্ট্রীট লাইটিং এ 'ঈদ মোবারক' লেখা আলোকসজ্জা, মসজিদের গম্ভুজের আদলে নিয়ন সাইন বা লাইটিং, বড় কার পার্কিং ও খোলা ময়দানে ঈদ জামাত, শপিংমল গুলোতে ঈদ মোবারক সাইন, গৃহসজ্জার ডেকোরেশন যেমন: বেলুনে ঈদ মোবারক লেখা, ওয়াল হেঙ্গিং স্টিকার,প্লাস্টিকের ব্যানারে লেখা ঈদ মোবারক সাইন, ইত্যাদি কিনতে পাওয়া যাচ্ছে এখন। মুসলীম/ এশীয় দোকান গুলোতে ঈদকার্ড বিক্রি হচ্ছে। ঈদের আগের রাত বারোটা পর্যন্ত মূলত: মহিলাদের জন্য ও মহিলা ব্যবস্থাপনায় 'চাঁদ রাত' নাম দিয়ে শপিং এর ব্যবস্থা, মুসলীম পোশাক ও মেয়েদের সাজ সজ্জার দ্রব্যাদি বিক্রি হচ্ছে প্রচুর। হিজাব, জিলবাব, আতর, টুপীর বাজারও বেশ রমরমা। এ অবস্থা দৃষ্টে বেনিয়া ইংরেজ বসে থাকে কী করে। তারাও মেইনস্ট্রীম দোকান গুলোতে ধীরে ধীরে মুসলীম খদ্দের আকর্ষণের প্রচেষ্টায় পিছিয়ে নেই। ব্যবসাটাই মূলকথা। আজদা (Asda),টেসকো ও তাদের দোকানে ঝুলিয়ে দিচ্ছে বিরাট ও দৃষ্টি আকর্ষণীয় সাইন। এরই মাধ্যমে আমাদের জানাচ্ছে— ঈদ মোবারক। 


আপনাদের সবাইকে -ঈদ মোবারক।


হাসনাত মুহাম্মদ আনোয়ার (কাকন ফকির)
সাহিত্যিক, গীতিকবি ও সুরকার।

Wednesday 12 May 2021

আতাউর রহমান আফতাব'র কবিতাঃ ঈদ মানে

আতাউর রহমান আফতাব'র কবিতাঃ ঈদ মানে


ঈদ মানে
আতাউর রহমান আফতাব

ঈদ মানে তো খুশির জেয়ার আনন্দ ধারায়,
শিশু-কিশোর হল্লা করে
নেঁচে নেঁচে হেসে খেলে আনন্দে গান গায়। 

ঈদ মানে তো খুশির খবর সারা জাহানময়,
গ্রীষ্মকালে কুশিয়ারা কলকলিয়ে বয়। 
ঈদ মানে তো পিঠা, পোলাও,মিষ্টি ও কাবাব,
কে যে বলে মুসলিম বিশ্বে
আছে কত অভাব! 

ঈদ মানে তো ভালোবাসা, বুকে বুক মিলায়,
হাজার পাখির গানে গানে হাজার নদির কলতানে সময় 
বয়ে যায়।

Sunday 18 April 2021

আতাউর রহমান আফতাব'র কবিতাঃ করোনা ভাইরাস

আতাউর রহমান আফতাব'র কবিতাঃ করোনা ভাইরাস



করোনা ভাইরাস
আতাউর রহমান আফতাব

বছর ঘুরে এলো রমজান 
বেড়ে গেলো করোনা,
বৃষ্টি এলো বর্ষা এলো
সৃষ্টি হলেো ঝর্ণা। 

কাজের অভাব,লকডাউন,পাতে পড়ে আলু আর নুন,কাঁচা মরিচ ভর্তা,
আলু করুর স্বাদটা যদি 
পেত বড় কর্তা! 

রমজান এলো বছর ঘুরে 
সাথে এলো করোনা,
দ্বিগুণ বেগে প্রবাহিত 
মাধবকুণ্ডুর ঝর্ণা। 

ধার্মিকেরা জিকির করে 
মসজিদে বসে,
মরুভূমির খাজুরগুলি
ভরা মধুর রসে।

Friday 2 April 2021

আতাউর রহমান আফতাব'র কবিতাঃ গ্রীষ্মকালের ডাক

আতাউর রহমান আফতাব'র কবিতাঃ গ্রীষ্মকালের ডাক




গ্রীষ্মকালের ডাক
আতাউর রহমান আফতাব

গ্রীষ্মকাল এলো বলে চারিদিকে মেঘের গর্জন,
চৈত্রমাসের শেষ পক্ষ
বাংলাদেশে বোশেখের ডাক,
বোরো ধান পাকেঁনি তো কৃষক বুনে কল্পনার জাল
এক পশলা বৃষ্টি পাতে পুটি মাছের ফাল। 

গ্রীষ্মকাল আসবে বলে
নববর্ষের শুরু হবে গান,
বাঙালীর ঘরে ঘরে দিন রাত 
হবে কত অনুষ্ঠান।

Friday 26 March 2021

আতাউর রহমান আফতাব'র কবিতাঃ মিছিল

আতাউর রহমান আফতাব'র কবিতাঃ মিছিল

মিছিল
আতাউর রহমান আফতাব


জাগো জাগো বাঙ্গালী জাগো!
জেগেছেরে জেগেছে বাঙ্গালী জেগেছ !!
শৈশবের মিছিল,
যখন তখন চলে মিছিল মাঠে অার ময়দানে
পেছকুন্দা মিছিল করে কাকতাড়ুয়ার গানে। 


যুদ্ধ চলে দিকে দিকে যুদ্ধ চলে বন্দরে
প্রিয়জনের দেখা নেই
কাদেঁ কেবল অন্তরে।

বাংলাদেশ  স্বাধীন হবে
বঙ্গবন্ধুর ডাক,
ফিরে এলো ২৬ শে মার্চ
কোথাও নেই ফাঁক। 


শৈশবের স্মৃতি গুলি উঠা-নামা করে,
মিছিল করে দামাল ছেলে
কে আর থাকে ঘরে !

এ কে এম আব্দুল্লাহ'র কবিতাঃ বিশ্বাসি মুখগুলো

এ কে এম আব্দুল্লাহ'র কবিতাঃ বিশ্বাসি মুখগুলো


বিশ্বাসি মুখগুলো
এ কে এম আব্দুল্লাহ


একদিন,জীবন থেমেছিল— আমার কোমল হাসির ভাঁজে।তোমরা আগুনের মাঠ চষে,এনে  দিলে বিজয়ের স্বাদ।যেখানে আজও রাতের আঁধার ভেঁঙে,পিতার স্বপ্নেরা করে ভিড়।আমি ক্লান্তিহীন মায়ের চোখে,গৌরবের মখমল পর্দার ফাঁকে কান পাতি। শুনি ভোরের আওয়াজ। এরপর স্বপ্নের সিঁড়ি ভেঙে, রাতের বাকস খুলে গেলে— বের হয়ে আসে পিতার রক্তাক্ত শার্ট।দৃষ্টির কেনভাস ভেঙে কলারে চমকায় পিতার বিজয় হাসি।আমি সাহসী যুবক হয়ে ওঠি। আর সেই হাসি মেখে স্পর্শ করি রক্তের দানা। 

এভাবে,আমি প্রতি রোজ লিখে রাখি,পৃথিবীর মলাটে মোড়ানো ইতিহাসের পাতায়,বিজয়ের দলিল। আমার কানে ভেসে আসে উল্লাসিত চরণধ্বনি,পিতার নির্মিত পথে। রাতের শেষে সুর্যের ছোঁয়ায় দুলে ওঠে আকাশ। সময়ের স্ক্রিনে ভেসে ওঠে বিশ্বাসী মুখগুলো।  

আর আমি হৃদয়ের ড্রয়ার খুলে তুলে রাখি যতনে— তাদের চরণধ্বনি। 

কবি এ.কে.এম আব্দুল্লাহ’র জন্মদিন আজ

কবি এ.কে.এম আব্দুল্লাহ’র জন্মদিন আজ



গোলাপগঞ্জের কুশিয়ারা পাড়ের কৃতি সন্তান, যুক্তরাজ্য প্রবাসী, কবি ও সাহিত্যিক এ.কে.এম আব্দুল্লাহ’র জন্মদিন আজ। ১৯৭০ সালের এই দিনে গোলাপগঞ্জের বুধবারীবাজার ইউনিয়নের বনগ্রামে জন্মগ্রহণ করেন কবি এ.কে.এম আব্দুল্লাহ। তাঁর পিতা মরহুম ক্বারী মোহাম্মদ ছুরাব আলী, মাতা মরহুমা ফাতিরা খাতুন। তিনভাই ও তিন বোনের মধ্যে কনিষ্ঠ সন্তান তিনি।


কবি ও কথা সাহিত্যিক এ কে এম আব্দুল্লাহ ১৯৯২সাল থেকে যুক্তরাজ্যের লন্ডনে বসবাস করছেন। প্রবাসী এ কবি, গদ্যকার  দীর্ঘদিন থেকে যুক্তরাজ্যে অবস্থান করলেও নিজেকে বাংলা সাহিত্য চর্চায় নিয়োজিত রেখেছেন নিয়মিত। বিভিন্ন প্রকাশনা সংস্থা থেকে প্রকাশিত হয়েছে তাঁর লেখা কবিতা,উপন্যাস ও গল্পগ্রন্থ। রয়েছে বেশ কিছু যৌথ প্রকাশনা। ইংরেজিতে অনুবাদ কবিতা প্রকাশিত হয়েছে বিভিন্ন সংকলনে।  এছাড়াও তিনি সফলভাবে সম্পাদনা করছেন অণুগল্প সংকলন ‘শব্দবিন্দু’ ও ড্যাশ-অনলাইন ম্যাগাজিনসহ বিভিন্ন লিটলম্যাগ। এ কে এম আব্দুল্লাহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পত্রিকা, অনলাইন সাহিত্য পত্রিকা , সাহিত্য ব্লগ, লিটলম্যাগসহ বিভিন্ন মাধ্যমে লিখে চলেছেন নিয়মিত।


কবির শিক্ষা জীবনঃ
কবি এ কে এম আব্দুল্লাহর লেখাপড়ার হাতেখড়ি হয় বাড়ির পাশের সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। প্রাথমিক শিক্ষা অর্জন শেষে তিনি স্থানীয় আল-এমদাদ হাইস্কুল এন্ড কলেজে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা লাভ করেন। এরপর সিলেট এম সি বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করে যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমান। 

সাহিত্য চর্চায় কবিঃ
কবি এ কে এম আব্দুল্লাহ কিশোর বয়সে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে লেখাপড়াকালীন থেকেই লেখা-লেখি শুরু করেন। তবে মধ্যে কিছুটা বিরতি শেষে প্রবাসে পাড়ি জমানোর পর শত ব্যস্ততায়ও নিজেকে সাহিত্য চর্চায় আবার নিয়োজিত করেন। তাঁর অসাধারণ লেখনীতে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে হয়েছেন ব্যাপক সমাদৃত। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পেয়েছেন বেশ কিছু সম্মাননা পুরষ্কারও।

তাঁর প্রকাশিত কবিতাগ্রন্থ — যে শহরে হারিয়ে ফেলেছি করোটি, ইমেল বডিতে সময়ের অনুবাদ, উপন্যাস ক্ষুধা ও সৌন্দর্য এবং টি ব্রেকের গল্প গল্পগ্রন্থ পাঠক মহলে ব্যাপক সমাদৃত হয়েছে। একইসাথে পাঠকের কাছে হয়েছে ব্যাপক প্রশংসিত। তাঁর লেখায় সমাজে ঘটেযাওয়া নানা ঘটনা তার উপলব্দিতে বাস্তবতাবোধের এক শৈল্পিক রুপ যেনো প্রকাশিত হয়। এ কে এম আব্দুল্লাহ’র লেখা পাঠকমনের খোরাক মিটিয়ে আনন্দ, চেতনাবোধ ও অনুপ্রাণিত করে তুলেছে পাঠকের মন। 

তাছাড়া তাঁর লেখা বইগুলোর উপর বেশ কিছু চমৎকার পাঠপ্রতিক্রিয়া প্রকাশিত হয়েছে জনপ্রিয় জাতীয় পত্রিকা ইত্তেফাক,দৈনিক জনকণ্ঠ, সিলেট বেতার, চ্যানেল আই অনলাইন, সাহিত্যবার্তা, কুশিয়ারা নিউজ,জলধি-সহ বিভিন্ন পত্রপত্রিকায়।

গ্রন্থাবলীঃ
এ কে এম আব্দুল্লাহ’র প্রকাশিত কবিতাগ্রন্থসমূহের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে “ইমেইল বডিতে সময়ের অনুবাদ, সচেতনা, হৃদয়ে রক্তক্ষরণ, মাটির মাচায় দণ্ডিত প্রজাপতি, যে শহরে হারিয়ে ফেলেছি করোটি” প্রভৃতি।

তাঁর লেখা উপন্যাসসমূহের মধ্যে রয়েছে – ক্ষুধা ও সৌন্দর্য।
গল্পগ্রন্থের মধ্যে রয়েছে 'টি ব্রেকের গল্প'। 

সম্পাদনাঃ
কবি এ কে এম আব্দুল্লাহর সম্পাদনা ও প্রকাশনায় বাংলা ও ইংরেজি উভয় সংস্করণে ড্যাশ ওয়েব ম্যাগ ডটকম নামের একটি অনলাইন ম্যাগাজিন সাহিত্য অঙ্গনে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। যা মাসিক সংকলন নিয়ে অল্পদিনের মধ্যেই সাহিত্য অঙ্গনে সমাদৃত হতে সক্ষম হয়েছে। তাছাড়া কবি এ কে এম আব্দুল্লাহ সম্পাদনা করেন অণুগল্প সংকলন শব্দবিন্দু। 

সংগঠকঃ
এ কে এম আব্দুল্লাহ একজন সফল সংগঠক হিসেবেও বেশ সুনাম অর্জন করেছেন। তিনি প্রতাষ্ঠা করেছেন কবিতাস্বজন, পয়েট্রি ক্লাব ইউকে। সংহতি সাহিত্য পরিষদ,সম্মিলিত সাহিত্য পরিষদসহ বিভিন্ন সাহিত্য সংগঠনের সাথেও রয়েছেন সম্পৃক্ত। বর্তমানে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক পরিষদ ইউকে-এর কোষাধ্যক্ষের দায়িত্বে রয়েছেন তিনি।

এছাড়া তিনি শিক্ষার উন্নয়নের জন্য গঠিত সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলা এডুকেশন ট্রাস্ট ইউকের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে আল এমদাদ হাইস্কুল ও কলেজ এডুকেশন ট্রাস্টের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন।

পুরস্কারঃ
কবি তাঁর অসাধারণ লেখনীর জন্য ব্যাপক সমাদৃত হয়েছেন আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে। পেয়েছেন বেশ কিছু সম্মাননা পুরস্কার ও স্বর্ণ মেডেল। ২০১৯ইং সালের ০৩ জানুয়ারি কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের স্মৃতিবিজড়িত শান্তিনিকেতনের সৎসংঘ পাঠাগারের পক্ষ থেকে দক্ষিণ এশিয়ার সেরা দশটি বইয়ের লেখককে সম্মাননা এওয়ার্ড প্রদান করা হয়। এসময় বাংলাদেশের দুইজন লেখককে মনোনীত করে শান্তিনিকেতন সৎসংঘ পাঠাগার। এরমধ্যে কবি এ কে এম আব্দুল্লাহর লেখা কবিতাগ্রন্থ 'যে শহরে হারিয়ে ফেলেছি করোটি' বইটিকে সেরা মনোনীত করে কবিকে সম্মাননা এওয়ার্ডে ভূষিত করে শান্তিনিকেতন সৎসংঘ পাঠাগার। এছাড়া পেয়েছেন ভারতের রাজস্হানের ড.শ্যাম সুন্দর মেমোরিয়াল ট্রাস্টের (শতবছর পূর্তি পালন উপলক্ষে) পক্ষ থেকে ২৫ হাজার রুপি ও একটি স্বর্ণ মেডেল পুরস্কার। উল্লেখ্য এই সংগঠন প্রতিবছর সাহিত্যের বিভিন্ন শাখায় অবদানের জন্য এশিয়ার বিভিন্ন দেশের সাহিত্যিকদের এ পুরষ্কার দিয়ে থাকে। এছাড়া কবি আব্দুল্লাহ সাহিত্যেও পেয়েছেন বেশ কিছু সম্মাননা পুরষ্কার। কবির এ প্রাপ্তিতে যোগ হোক নতুন মাত্রা। জন্মদিনে কুশিয়ারা নিউজ পরিবারের পক্ষ থেকে কবির প্রতি অজস্র শুভেচ্ছা।