Showing posts with label খেলাধুলা. Show all posts
Showing posts with label খেলাধুলা. Show all posts

Tuesday, 20 December 2022

আর্জেন্টিনার তৃতীয় গোল বাতিল করা উচিত ছিল

আর্জেন্টিনার তৃতীয় গোল বাতিল করা উচিত ছিল



ফরাসি গণমাধ্যম এল একুইপের দাবি, ‘অতিরিক্ত আবেগী হয়ে গোলের আগে মাঠে ঢুকে পড়েন দুই আর্জেন্টাইন ফুটবলার। নিয়ম অনুযায়ী গোলটি বাতিল হওয়ার কথা।’

ফিফার নিয়ম অনুযায়ী, কোনও গোল হওয়ার পর রেফারি যদি লক্ষ্য করেন গোলের আগেই অতিরিক্ত খেলোয়াড় মাঠে তাহলে গোল বাতিল করে পুনরায় খেলা শুরু করতে হবে। অতিরিক্ত খেলোয়াড় মাঠের যেখানে ছিলেন সেখান থেকে ফ্রি-কিকের মাধ্যমে খেলা শুরু হবে।

গোলটি ভারে চেক হলেও অতিরিক্ত খেলোয়াড়ের মাঠে ঢোকার বিষয়টি চেক করা হয়েছে কিনা তা নিশ্চিত করতে পারেনি এল একুইপ।

ফ্রান্সের বিপক্ষে কাতার বিশ্বকাপের ‍রুদ্ধশ্বাস ফাইনালে নির্ধারিত সময়ের খেলা ২-২ ড্র হয়। অতিরিক্ত সময়ে খেলা গড়ালে ১০৮ মিনিট গোল করে ফের আর্জেন্টিনাকে এগিয়ে নেন লিওনেল মেসি। দুরন্ত আক্রমণে গোল দিলেন মেসি। 

লাউতারো মার্টিনেজের শট দারুণ ভাবে বাঁচিয়ে দিলেও শেষ রক্ষা করতে পারলেন না লরিস। ফিরতি বল মেসির হাঁটুতে লেগে জালে ঢুকে গেল হয়। ফ্রান্স অফসাইডের আবেদন করেছিল। কিন্তু ভার-এর চিত্রে দেখা গেল, ফ্রান্সের ডিফেন্ডার কিছুটা ভেতরে ঢুকে ছিলেন। ফলে গোলের সিদ্ধান্ত বহাল থাকে।

তবে ফরাসি মিডিয়ার দাবি ওই গোলটি বাতিল করা উচিত ছিল। কারণ কী? গোলের আগেই নাকি আবেগী হয়ে মাঠে ঢুকে পড়েছিলেন বেঞ্চের দুই খেলোয়াড়! 

Saturday, 2 April 2022

ফিফা বিশ্বকাপের পূর্ণাঙ্গ সময়সূচি

ফিফা বিশ্বকাপের পূর্ণাঙ্গ সময়সূচি


ফিফা বিশ্বকাপের চূড়ান্ত সূচি প্রকাশ করা হয়েছে। বিশ্বকাপে অংশ নিতে যাওয়া ৩২ দলের মধ্যে ২৯ দল চূড়ান্ত হয়েছে। বাকি ৩ দলের নাম জানা যাবে আগামী জুন মাসেই। তবে সম্ভাব্য হিসাব ধরেই শুক্রবার রাতে হয়েগেছে বিশ্বকাপের ড্র। এরপরই চূড়ান্ত হয়েছে কাতারে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ফিফা বিশ্বকাপের সূচি। 

২১ নভেম্বর শুরু হয়ে বিশ্বের অন্যতম বড় এই ক্রীড়া আসর শেষ হবে ১৮ ডিসেম্বর। বাংলাদেশ সময় অনুযায়ী কাতার বিশ্বকাপের সূচি দেখে নিন: 

গ্রুপ পর্ব- 
*
(রাত ১টার খেলা দিবাগত রাতের হিসেবে) 

তারিখম্যাচবাংলাদেশ সময় 
২১ নভেম্বরকাতার-ইকুয়েডরবিকেল ৪টা
২১ নভেম্বরইংল্যান্ড-ইরানসন্ধ্যা ৭টা
২১ নভেম্বরসেনেগাল-নেদারল্যান্ডসরাত ১০টা    
২১ নভেম্বরযুক্তরাষ্ট্র-ওয়েলস/স্কটল্যান্ড/ইউক্রেনরাত ১টা 
২২ নভেম্বর ডেনমার্ক-তিউনিসিয়াবিকেল ৪টা
২২ নভেম্বর ফ্রান্স-পেরু/অস্ট্রেলিয়া/ সংযুক্ত আরব আমিরাতসন্ধ্যা ৭টা
২২ নভেম্বর মেক্সিকো-পোল্যান্ডরাত ১০টা    
২২ নভেম্বর আর্জেন্টিনা-সৌদি আরব

রাত ১টা

২৩ নভেম্বর স্পেন-কোস্টারিকা/নিউজিল্যান্ডবিকেল ৪টা
২৩ নভেম্বর বেলজিয়াম-কানাডাসন্ধ্যা ৭টা
২৩ নভেম্বর জার্মানি-জাপানরাত ১০টা 
২৩ নভেম্বর মেক্সিকো-ক্রোয়েশিয়ারাত ১টা
২৪ নভেম্বরউরুগুয়ে-দক্ষিণ কোরিয়াবিকেল ৪টা
২৪ নভেম্বরপর্তুগাল-ঘানাসন্ধ্যা ৭টা
২৪ নভেম্বরসুইজারল্যান্ড-ক্যামেরুনরাত ১০টা 
২৪ নভেম্বরব্রাজিল-সার্বিয়ারাত ১টা
২৫ নভেম্বরইংল্যান্ড-যুক্তরাষ্ট্রবিকেল ৪টা
২৫ নভেম্বরকাতার-সেনেগালসন্ধ্যা ৭টা
২৫ নভেম্বরওয়েলস/স্কটল্যান্ড/ইউক্রেন-ইরানরাত ১০টা 
২৫ নভেম্বরনেদারল্যান্ডস-ইকুয়েডররাত ১টা
২৬ নভেম্বর পোল্যান্ড-সৌদি আরববিকেল ৪টা
২৬ নভেম্বর আর্জেন্টিনা-মেক্সিকোসন্ধ্যা ৭টা
২৬ নভেম্বর তিউনিসিয়া-পেরু/অস্ট্রেলিয়া/ আমিরাতরাত ১০টা 
২৬ নভেম্বর ফ্রান্স-ডেনমার্করাত ১টা
২৭ নভেম্বরবেলজিয়াম-মরক্কোবিকেল ৪টা
২৭ নভেম্বরস্পেন-জার্মানিসন্ধ্যা ৭টা
২৭ নভেম্বরক্রোয়েশিয়া-কানাডারাত ১০টা
২৭ নভেম্বরজাপান-কোস্টারিকা/নিউজিল্যান্ডরাত ১টা
২৮ নভেম্বর ব্রাজিল-সুইজারল্যান্ডবিকেল ৪টা
২৮ নভেম্বর দক্ষিণ কোরিয়া- ঘানা সন্ধ্যা ৭টা
২৮ নভেম্বর ক্যামেরুন-সার্বিয়ারাত ১০টা
২৮ নভেম্বর পর্তুগাল-উরুগুয়েরাত ১টা
২৯ নভেম্বরনেদারল্যান্ডস-কাতারবিকেল ৪টা
২৯ নভেম্বরওয়েলস/স্কটল্যান্ড/ইউক্রেন-ইংল্যান্ডসন্ধ্যা ৭টা
২৯ নভেম্বরইকুয়েডর-সেনেগালরাত ১০টা
২৯ নভেম্বরইরান-যুক্তরাষ্ট্ররাত ১টা
৩০ নভেম্বরপেরু/অস্ট্রেলিয়া/ আমিরাত-ডেনমার্কবিকেল ৪টা
৩০ নভেম্বরতিউনিসিয়া-ফ্রান্সসন্ধ্যা ৭টা
৩০ নভেম্বরসৌদি আরব-মেক্সিকোরাত ১০টা
৩০ নভেম্বরপোল্যান্ড-আর্জেন্টিনারাত ১টা
১ ডিসেম্বরজাপান-স্পেনবিকেল ৪টা
১ ডিসেম্বরক্রোয়েশিয়া-বেলজিয়ামসন্ধ্যা ৭টা
১ ডিসেম্বরকোস্টারিকা/নিউজিল্যান্ড-জার্মানিরাত ১০টা
১ ডিসেম্বরকানাডা- মরক্কো রাত ১টা
২ ডিসেম্বরঘানা-উরুগুয়েবিকেল ৪টা
২ ডিসেম্বরদক্ষিণ কোরিয়া-পর্তুগালসন্ধ্যা ৭টা
২ ডিসেম্বরসার্বিয়া-সুইজারল্যান্ডরাত ১০টা
২ ডিসেম্বরক্যামেরুন-ব্রাজিলরাত ১টা


দ্বিতীয় রাউন্ড (নকআউট পর্ব) 

তারিখম্যাচবাংলাদেশ সময়
৩ ডিসেম্বর এ১-বি২রাত ৯টা
৩ ডিসেম্বরসি১-ডি২রাত ১টা
৪ ডিসেম্বর ডি১-সি২রাত ৯টা
৪ ডিসেম্বর বি১-এ২রাত ১টা
৫ ডিসেম্বর ই১-এফ২রাত ৯টা
৫ ডিসেম্বর জি১-এইচ২রাত ১টা
৬ ডিসেম্বরএফ১-ই২রাত ৯টা
৬ ডিসেম্বরএইচ১-জি২রাত ১টা

কোয়ার্টার ফাইনাল    

তারিখম্যাচবাংলাদেশ সময়
৯ ডিসেম্বরই১-এফ২ জয়ী বনাম জি১-এইচ২ জয়ীরাত ৯টা
৯ ডিসেম্বরএ১-বি২ জয়ী বনাম সি১-ডি২ জয়ীরাত ১টা
১০ ডিসেম্বরএফ১-ই২ জয়ী বনাম এইচ১-জি২ জয়ীরাত ৯টা
১০ ডিসেম্বরবি১-এ২ জয়ী  বনাম ডি১-সি২ জয়ী রাত ১টা

সেমিফাইনাল 

তারিখম্যাচবাংলাদেশ সময়
১৩ ডিসেম্বর৯ ডিসেম্বরের খেলার বিজয় দুই দল রাত ১টা
১৪ ডিসেম্বর ১০  ডিসেম্বরের খেলার বিজয় দুই দল রাত ১টা

তৃতীয় স্থান    
১৭ ডিসেম্বর রাত ৯টা    দুই সেমিফাইনালের পরাজিত দল

ফাইনাল 

১৮ ডিসেম্বর - রাত ১টা : সেমিফাইনালের দুই বিজয়ী দল। 


কোন গ্রুপে কারাঃ

গ্রুপ 'এ': কাতার, ইকুয়েডর, সেনেগাল ও নেদারল্যান্ডস

গ্রুপ 'বি' : ইংল্যান্ড, ইরান, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরো প্লে-অফ (ওয়েলস/স্কটল্যান্ড/ইউক্রেন)

গ্রুপ 'সি': আর্জেন্টিনা, সৌদি আরব, মেক্সিকো ও পোল্যান্ড

গ্রুপ 'ডি' : ফ্রান্স, আন্তঃমহাদেশীয় প্লে-অফ ১ (পেরু/অস্ট্রেলিয়া/সংযুক্ত আরব আমিরাত), ডেনমার্ক ও তিউনেশিয়া

গ্রুপ 'ই': স্পেন, আন্তঃমহাদেশীয় প্লে-অফ ২ (কোস্টারিকা/নিউজিল্যান্ড), জার্মানি ও জাপান

গ্রুপ 'এফ' : বেলজিয়াম, কানাডা, মরক্কো ও ক্রোয়েশিয়া

গ্রুপ 'জি': ব্রাজিল, সার্বিয়া, সুইজারল্যান্ড ও ক্যামেরুন

গ্রুপ 'এইচ': পর্তুগাল, ঘানা, উরুগুয়ে ও দক্ষিণ কোরিয়া

Friday, 1 April 2022

ফুটবল বিশ্বকাপের গান 'হায়া হায়া' প্রকাশ (ভিডিও)

ফুটবল বিশ্বকাপের গান 'হায়া হায়া' প্রকাশ (ভিডিও)


চলতি বছরের নভেম্বর-ডিসম্বরে কাতারে বসছে ফিফা বিশ্বকাপের আসর। আজ শুক্রবার রাতে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ড্র। তার আগে বিশ্বকাপের অফিসিয়াল গান ‘হায়া হায়া' প্রকাশ করেছে ফিফা।

শুক্রবার ফিফার অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে গানটি। গানে কণ্ঠ দিয়েছেন কাতারের গায়িকা আয়েশা, আমেরিকান সঙ্গীত শিল্পী ত্রিনিদাদ কার্ডোনা ও আফ্রিকার ডাভিডো ।

ফুটবল বিশ্বকাপকে সামনে রেখে বেশকিছু গান প্রকাশ করবে ফিফা। যার প্রথমটি 'হায়া হায়া'।

এই গানের মাধ্যমে সবাইকে এক হওয়ার বার্তা দিল বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা। গানের মূল কথা হলো ‘বেটার টুগেদার'।

দোহায় বিশ্বকাপের ড্র অনুষ্ঠানে প্রথমবারের মতো সরাসরি সম্প্রচার করা হবে গানটি।

আসন্ন বিশ্বকাপে অংশ নিতে যাচ্ছে ৩২টি দল। বাঞ্চাই পর্বের খেলাও প্রায় শেষ। এর মধ্যে স্বাগতিক কাতারসহ নিশ্চিত হয়ে গেছে ২৯টি দল। বাকি তিন দল চূড়ান্ত হতে অপেক্ষা করতে হবে আগামী জুন পর্যন্ত। 



Monday, 15 November 2021

নিউজিল্যান্ডকে উড়িয়ে নতুন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া

নিউজিল্যান্ডকে উড়িয়ে নতুন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া


ওয়ানডে বিশ্বকাপ শিরোপার কমতি নেই অস্ট্রেলিয়ার। এখন পর্যন্ত হওয়া ১২ আসরের মধ্যে পাঁচবারই সেরা মুকুট উঠেছে অসিদের মাথায়। কিন্তু কুড়ি ওভারের ক্রিকেটের বিশ্ব আসরে ছয় আসর পেরিয়ে যাওয়ার পরেও অস্ট্রেলিয়ার ট্রফি ক্যাবিনেট ছিল পুরোপুরি শূন্য।

অবশেষে সপ্তম আসরে এসে অধরা শিরোপার দেখা পেল বিশ্ব ক্রিকেটের পরাশক্তি অস্ট্রেলিয়া। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ফাইনাল জিততে তাদের গড়তে হতো ইতিহাস। নতুন রেকর্ড গড়েই শিরোপা ঘরে তুলেছে অ্যারন ফিঞ্চের দল। ফাইনালে অসিদের সামনে পাত্তাই পায়নি নিউজিল্যান্ড।

দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস হেরে আগে ব্যাট করা নিউজিল্যান্ডের সংগ্রহ ছিল ৪ উইকেটে ১৭২ রান। যা ছিল বিশ্বকাপ ফাইনালে সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহের রেকর্ড। শিরোপা জেতার পথে নতুন রেকর্ড গড়ে মাত্র ২ উইকেট হারিয়ে ১৮.৫ ওভারেই ম্যাচ জিতে নিয়েছে অস্ট্রেলিয়া।

অসিদের প্রথম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়ে ব্যাট হাতে বড় অবদান রেখেছেন তিন নম্বরে নামা ডানহাতি ব্যাটার মিচেল মার্শ। তার ব্যাট থেকে আসে ৫০ বলে ৭৭ রান। বাঁহাতি ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার খেলেছেন ৩৭ বলে ৫৩ রানের ইনিংস। বল হাতে ৪ ওভারে মাত্র ১৬ রান খরচায় ৩ উইকেট নিয়েছেন জশ হ্যাজলউড।

ম্যাচের প্রথম ইনিংসে মাত্র ৩২ বলে ফিফটি করে বিশ্বকাপ ফাইনালে দ্রুততম ফিফটির রেকর্ড গড়েছিলেন কিউই অধিনায়ক কেইন উইলিয়ামসন। রান তাড়া করতে নেমে ৩১ বলে ফিফটি করে সেই রেকর্ড নিজের করে নেন মিচেল মার্শ।

তার ৭৭ রানের ইনিংসের সুবাদেই মূলত সাত বল হাতে রেখে ম্যাচ জিতে নিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। নিজেদের ইনিংসের ১৯তম ওভারের পঞ্চম বল রিভার্স স্কুপে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে জয় নিশ্চিত করেছেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। তিনি অপরাজিত ছিলেন ১৮ বলে ২৮ রান করে।

অথচ শুরুতেই অধিনায়কের বিদায়ে চাপে পড়ে গিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। নিউজিল্যান্ডের করা ১৭২ রানের সংগ্রহটি তখন মনে হচ্ছিল বেশ কঠিন। তবে দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে দারুণভাবে অসিদের ম্যাচে রাখেন আরেক ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার ও তিন নম্বরে নামা মিচেল মার্শ।

১৭৩ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ইনিংসের প্রথম ওভারে বোল্টের বিপক্ষে কোনো জবাবই খুঁজে পাননি ডেভিড ওয়ার্নার ও অ্যারন ফিঞ্চ। প্রথম ওভারে আসে মাত্র ১ রান। টিম সাউদির করা দ্বিতীয় ওভারে দুই চারের মারে ১০ রান তুলে নেন ওয়ার্নার।

তার দেখাদেখি বোল্টের করা ইনিংসের তৃতীয় ওভারের দ্বিতীয় বলে চার মারেন ফিঞ্চ। কিন্তু পরের বলেই তার বিদায়ঘণ্টা বাজিয়ে দেন বোল্ট। ডিপ মিড উইকেটে বেশ খানিকটা পথ দৌড়ে দারুণ এক ডাইভিং ক্যাচ ধরেন মিচেল।

শুরুতেই অধিনায়ক ফিরে গেলে খানিক খোলসবন্দী হয়ে পড়েন ওয়ার্নার। তবে অপরপ্রান্তে তাকে চাপমুক্ত রাখেন মিচেল মার্শ। অ্যাডাম মিলনের করা চতুর্থ ওভারের প্রথম তিন বলেই দুইটি চার ও একটি ছক্কা হাঁকান মার্শ। প্রথম পাওয়ার প্লে'তে অস্ট্রেলিয়া করে ৪৩ রান।

এরপর হাত খুলে খেলতে শুরু করেন ওয়ার্নারও। বিশেষ করে ইশ সোধির করা নবম ওভারে হাঁকান দুই চার ও একটি বিশাল ছক্কা। যার সুবাদে প্রথম ছয় ওভারে ৪৩ রান করা অস্ট্রেলিয়া পরের চার ওভারেই পেয়ে যায় আরও ৩৯ রান।

জুটি দাঁড়িয়ে যাওয়ার পর আর পেছন ফিরে তাকাননি ওয়ার্নার ও মার্শ। দুজন মিলে তাণ্ডব চালাতে থাকেন কিউই বোলারদের ওপর। উইকেটের আশায় ১১তম ওভারে জিমি নিশামকে আনেন কিউই অধিনায়ক। সেই ওভারে একটি করে ছক্কা হাঁকান ওয়ার্নার ও মার্শ।

নিশামকে হাঁকানো ছক্কায় ব্যক্তিগত ফিফটি পূরণ হয় ওয়ার্নারের। প্রথম ১৮ বলে মাত্র ১৮ রান করা ওয়ার্নার ফিফটি ছুঁয়ে ফেলেন ৩৪ বলে। অর্থাৎ পরের ১৬ বল থেকে তিনি করেন ৩৩ রান। মিচেল স্যান্টনারের করা পরের ওভারে পূরণ হয় অস্ট্রেলিয়ার দলীয় শতক।

তবে ওয়ার্নারকে বেশি দূর যেতে দেননি বোল্ট। ইনিংসের ১৩তম ওভারে নিজের দ্বিতীয় স্পেলে বোলিং করতে এসে দ্বিতীয় বলেই বোল্ড করে দেন ওয়ার্নারকে। আউট হওয়ার আগে চার চার ও তিন ছয়ের মারে ৩৭ বলে ৫৩ রান করেন ওয়ার্নার। তার বিদায়ে ভাঙে ৯২ রানের দ্বিতীয় উইকেট জুটি।

তাতেও অবশ্য কোনো সমস্যা হয়নি অস্ট্রেলিয়ার। কেননা তৃতীয় উইকেট জুটিতেও আক্রমণাত্মক ব্যাটিং চালু রাখেন মার্শ ও গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। ইনিংসের ১৩ থেকে ১৭ ওভারের মধ্যে ৫০ রান নেন এ দুজন। যা অস্ট্রেলিয়ার জয় একপ্রকার নিশ্চিতই করে দেয়।

তবে ১৮তম ওভারে মিলনে দারুণ বোলিং করেন। যার বলে বাড়ে অস্ট্রেলিয়ার জয়ের অপেক্ষা। পরে সাউদির করা ১৯তম ওভারের প্রথম ও পঞ্চম বলে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ম্যাচ শেষ করে দেয় তারা। ম্যাক্সওয়েলের রিভার্স স্কুপে ফুরোয় দীর্ঘদিনের শিরোপার অপেক্ষা।

এর আগে টস জিতে নিউজিল্যান্ডকে ব্যাটিংয়ে পাঠিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ। ব্যাটিংয়ে নেমে মিচেল স্টার্কের করা ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ইতিবাচক শুরুর ইঙ্গিত দিয়েছিলেন কিউই ওপেনার গাপটিল।

কিন্তু পাওয়ার প্লে'তে সে তুলনায় রান তুলতে পারেনি নিউজিল্যান্ড। প্রথম ওভারের মতো দ্বিতীয় ওভারেও আসে একটি বাউন্ডারি। তৃতীয় ওভারের প্রথম বলে ইনিংসের প্রথম ছক্কা হাঁকান সেমিফাইনালে কিউইদের জয়ের নায়ক মিচেল।

গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের করা সেই ওভারেই জীবন পান গাপটিল। তৃতীয় বলে তার ব্যাটের নিচের কানায় লেগেছিল বল। কিন্তু সেটি গ্লাভসে রাখতে পারেননি অস্ট্রেলিয়ার উইকেটরক্ষক ম্যাথু ওয়েড। ফলে ব্যক্তিগত ১০ রানে জীবন পেয়ে যান গাপটিল।

তবে গাপটিলের ক্যাচ ছাড়লেও মিচেলকে ফেরাতে ভুল করেননি ওয়েড। ইনিংসের চতুর্থ ওভারের পঞ্চম বলটি লেগ কাটার করেছিলেন জশ হ্যাজলউড। বলের গতি ব্যবহার করে লেট কাটের মতো খেলেন মিচেল। কিন্তু তার ব্যাটের কানায় লেগে বল চলে যায় ওয়েডের গ্লাভসে। ফলে সমাপ্তি ঘটে ৮ বলে ১১ রানের ইনিংসের।

মিচেলের বিদায়ের পর উইকেটে আসেন অধিনায়ক উইলিয়ামসন। প্রথম চার ওভারে ২৮ থেকে পরের দুই ওভারে কিউইদের স্কোরবোর্ডে যোগ হয় মাত্র ৫ রান। পাওয়ার প্লের শেষ দুই ওভারে দারুণ বোলিং করে নিউজিল্যান্ডকে আটকে রেখেছেন অসি বোলাররা।

প্রথম উইকেটের সেই ধাক্কা টানা চার ওভার পর্যন্ত সইতে হয়েছে নিউজিল্যান্ড। ইনিংসের পঞ্চম থেকে অষ্টম ওভার পর্যন্ত কোনো বাউন্ডারিই হয়নি। আট ওভার শেষে তাদের স্কোর দাঁড়ায় ১ উইকেটে মাত্র ৪১ রান। উইলিয়ামসন তখন অপরাজিত ১২ বলে ৬ রানে আর গাপটিল খেলছিলেন ২৮ বলে ২২ রান নিয়ে।

সেখান থেকে নবম ওভারে জোড়া বাউন্ডারি হাঁকিয়ে রান রেট কিছুটা বাড়িয়ে নেন উইলিয়ামসন। সেই ওভারেই পূরণ হয় কিউইদের দলীয় পঞ্চাশ। অ্যাডাম জাম্পার করা দশম ওভারে ছয়টি সিঙ্গেল নিলে স্কোর দাঁড়ায় ১ উইকেটে ৫৭ রান।

ইনিংসের মাঝপথ পেরিয়ে যাওয়ার পরই যেন সম্বিৎ ফেরে উইলিয়ামসনের। মিচেল স্টার্কের করা ১১তম ওভারে পরপর তিন চারের মারে তুলে নেন ১৯ রান। স্টার্কের এই ওভারে উল্টো বিদায়ঘণ্টা বাজতে পারতো উইলিয়ামসনের। কিন্তু চতুর্থ বলে ক্যাচ ছেড়ে দেন হ্যাজলউড। ফলে ২১ রানে জীবন পেয়ে যান উইলিয়ামসন।

অ্যাডাম জাম্পার করা পরের ওভারে মার্টিন গাপটিল আউট হন ৩৫ বলে মাত্র ২৫ রান করে। তবে পথ হারাননি উইলিয়ামসন। ম্যাক্সওয়েলের করা ১৩তম ওভারে ব্যাক টু ব্যাক ছক্কার মারে তুলে নেন ১৬ রান। সেই ওভারে ডিপ মিড উইকেট দিয়ে হাঁকানো দ্বিতীয় ছক্কায় মাত্র ৩২ বলে ফিফটি পূরণ হয় কিউই অধিনায়কের।

আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে এটি তার ১৪তম ফিফটি। শুধু তাই নয়, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে তার ৩২ বলের ফিফটিই দ্রুততম। এর আগে বিশ্বকাপ ফাইনালে আর কেউ এর চেয়ে দ্রুত পঞ্চাশ করতে পারেননি।

অধিনায়কের দেখাদেখি হাত খুলে মারতে শুরু করেন চার নম্বরে নামা গ্লেন ফিলিপসও। জাম্পার করা ১৫তম ওভারে একটি করে চার-ছক্কার মারে নিয়ে নেন ১২ রান। স্টার্কের করা পরের ওভারে রীতিমতো তাণ্ডব চালান উইলিয়ামসন। চারটি চার ও এক ছয়ের মারে নিয়ে নেন ২২ রান।

এই ওভারে হাঁকানো ছক্কাটির মাধ্যমে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে ২ হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন উইলিয়ামসন। পাশাপাশি একই ওভারে বিশ্বকাপ ফাইনালে অধিনায়কদের মধ্যে সর্বোচ্চ ইনিংসের রেকর্ডও নিজের করে নেন কিউই দলপতি।

নিজের প্রথম ওভারে ৯ রান দেওয়ার পর দ্বিতীয় ওভারে ১৯ রান দেন স্টার্ক। আর ১৬তম ওভারে ২২ রান খরচ করার মাধ্যমে মাত্র তিন ওভারেই ৫০ রান দিয়ে বসেন অস্ট্রেলিয়ার স্ট্রাইক বোলার। যা বাড়িয়ে দেয় অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চের চিন্তা।

ইনিংসের ১৬ ওভারের মধ্যে স্টার্কের করা প্রথম তিন ওভারে উইলিয়ামসন মোকাবিলা করেন ১২টি বল। যেখানে সাত চার ও একটি ছক্কা হাঁকান উইলিয়ামসন। যা কি না বিশ্বকাপের এক ম্যাচে নির্দিষ্ট কোনো বোলারের বিপক্ষে সর্বোচ্চ বাউন্ডারি হাঁকানোর রেকর্ড।

স্টার্কের দেদারসে রান বিলানোর ধারাটা খানিক চেপে ধরেন অন্য দুই পেসার প্যাট কামিনস ও জশ হ্যাজলউড। কামিনসের করা ১৭তম ওভারে আসে মাত্র ৮ রান। পরের ওভারে ৫ রান দিয়ে উইলিয়ামসন ও ফিলিপসকে সাজঘরে পাঠান হ্যাজলউড।

আউট হওয়ার আগে ১০ চার ও তিন ছয়ের মারে ৪৮ বলে ৮৫ রান করেন উইলিয়ামসন। যা কি না বিশ্বকাপ ফাইনালে যৌথভাবে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত সংগ্রহের রেকর্ড। এর আগে ২০১৬ বিশ্বকাপের ফাইনালেও ঠিক ৮৫ রান করেছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটার মারলন স্যামুয়েলস।

অন্যদিকে ফিলিপসের ব্যাট থেকে আসে ১৮ রান। এ দুজনের তৃতীয় উইকেট জুটির সংগ্রহ মাত্র ৬.২ ওভারে ৬৮ রান। ফিলিপস-উইলিয়ামসন ফিরে যাওয়ার পর শেষ দুই ওভারে আসে ২৩ রান। জিমি নিশাম ৭ বলে ১৩ এবং টিম সেইফার্ট করেন ৬ বলে ৮ রান।

স্কোরকার্ড

নিউজিল্যান্ড: ১৭২/৪ (মার্টিন গাপটিল ২৮, ড্যারেল মিচেল ১১, কেন উইলিয়ামসন ৮৫, গ্লেন ফিলিপস ১৮, জেমস নিশাম ১৩*, টিম সেইফার্ট ৮*; জশ হ্যাজলউড ৪-০-১৬-৩, মিচেল স্টার্ক ৪-০-৬০-০, অ্যাডাম জাম্পা ৪-০-২৬-১, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল ৩-০-২৮-০, প্যাট কামিনস ৪-০-২৭-০, মিচেল মার্শ ১-০-১১-০)

অস্ট্রেলিয়া: ১৭৩/২ (অ্যারন ফিঞ্চ ৫, ডেভিড ওয়ার্নার ৫৩, মিচেল মার্শ ৭৭*, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল ২৮; ট্রেন্ট বোল্ট ৪-০-১৮-২, টিম সাউদি ৩.৫-০-৪৩-০, অ্যাডাম মিলনে ৪-০-৩০-০, ইশ সোধি ৩-০-৪০-০, মিচেল স্যান্টনার ৩-০-২৩-০, জেমস নিশাম ১-০-১৫-০)

ফলাফল: অস্ট্রেলিয়া ৮ উইকেটে জয়ী

ম্যান অব দ্য ম্যাচ: মিচেল মার্শ (৭৭ রান)

ম্যাচ অব দ্য টুর্নামেন্ট: ডেভিড ওয়ার্নার (২৮৯ রান)

Sunday, 14 November 2021

কে হাসবে শেষ হাসি? অস্ট্রেলিয়া না নিউজিল্যান্ড

কে হাসবে শেষ হাসি? অস্ট্রেলিয়া না নিউজিল্যান্ড



প্রথমবার শিরোপা জয়ের লক্ষ্য নিয়ে আগামীকাল টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে মুখোমুখি হচ্ছে নিউজিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া। আগের ছয় আসরে কোনবারই শিরোপার স্বাদ নিতে পারেনি এই আসরের দুই ফাইনালিষ্ট। তাই প্রথমবারের মত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শিরোপা জিততে মরিয়া নিউজিল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়া। দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় রাত ৮টায় শুরু হবে নিউজিল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়ার মধ্যকার ফাইনালের মহারণ।


এ নিয়ে দ্বিতীয়বারের মত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলতে নামবে অস্ট্রেলিয়া। ২০১০ সালে ফাইনালে উঠলেও, শিরোপার স্বাদ নিতে পারেনি অসিরা। ইংল্যান্ডের কাছে ৭ উইকেটে হারতে হয় অস্ট্রেলিয়াকে। এরপর আর ফাইনালের টিকিট পায়নি অসিরা। সপ্তম আসরে এসে পাকিস্তানকে হারিয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করে অস্ট্রেলিয়া। সুপার টুয়েলভে ৫ ম্যাচের ৪টিতে জিতে ৮ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ রানার্সআপ হয়ে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করেছে অস্ট্রেলিয়া। সেমিতে অস্ট্রেলিয়ার প্রতিপক্ষ ছিলো শক্তিশালী পাকিস্তান। প্রথম ইনিংসে রিজওয়ান-বাবরের তাণ্ডবে পাকিস্তানের জয় দেখছিল ক্রিকেট বিশ্ব। কিন্তু ক্রিকেটে শেষ বলতে কিছু নেই। অস্ট্রেলিয়া ইনিংসের ১৫ ওভার পর্যন্ত চালকের আসনেই ছিলো পাকিস্তান। কিন্তু ১৬ থেকে ১৯ ওভারের মধ্যে ম্যাচে মোড় ঘুড়িয়ে দেয় অস্ট্রেলিয়ার দুই ব্যাটার মার্কাস স্টয়নিস ও ম্যাথু ওয়েড।
 
ষষ্ঠ উইকেটে ৪১ বলে অবিচ্ছিন্ন ৮১ রানের জুটি গড়ে সেমির লড়াইয়ে অস্ট্রেলিয়ার জয় নিশ্চিত করেন স্টয়নিস ও ওয়েড। অথচ পাকিস্তানের ছুঁড়ে দেয়া ১৭৭ রানের টার্গেটে ৯৬ রান তুলতেই ৫ উইকেট হারিয়েছিলো অস্ট্রেলিয়া। কিন্তু পাকিস্তানের বোলিং আক্রমণের সামনে বুক চিতিয়ে লড়াই করেছেন স্টয়নিস ও ওয়েড। তাতে অস্ট্রেলিয়াকে শেষ হাসিতে রাঙ্গিয়েছেন স্টয়নিস ও ওয়েড। ৫ উইকেটের জয়ে ফাইনালে উঠে অসিরা। ৩১ বলে ২টি চার-ছক্কায় অপরাজিত ৪০ রান করেন স্টয়নিস। ১৭ বলে ২টি চার ও ৪টি ছক্কায় ৪১ রানে অপরাজিত থকেন ওয়েড। এরমধ্যে ৩টি ছক্কা ওয়েড হাঁকিয়েছেন ইনিংসের ১৯তম ওভারের শেষ তিন বলে।

বিশ্বকাপের বড় ম্যাচে বরাবর ভালো খেলা অসিদের ভাবা হচ্ছে এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সম্ভাব্য চ্যাম্পিয়ন। নীরব ঘাতক নিউজিল্যান্ডকেও হালকাভাবে দেখার সুযোগ নেই। তারাও ফাইনালে উন্নীত হয়েছে এই সংস্করণের সাবেক চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডকে হারিয়ে।


আইসিসি টুর্নামেন্টের সৌন্দর্য ভালো উইকেটে খেলা চালানো। যেখানেই বিশ্বকাপ সেখানেই স্পোর্টিং উইকেট দেওয়ার চেষ্টা করে সংস্থাটি। আরব আমিরাতের টি২০ বিশ্বকাপেও স্পোর্টিং উইকেটে খেলা হয়েছে টুর্নামেন্টজুড়ে। খুব বেশি বড় স্কোর না হলেও বেশিরভাগ ম্যাচেই লড়াই হয়েছে সমান তালে। ব্যাটাররা বিধ্বংসী ব্যাটিং দিয়ে পিষ্ট করতে পারেননি বোলারদের। বোলাররাও ধস নামাতে পারেননি। যে কারণে ম্যাচগুলো উপভোগ্য হয়ে উঠেছিল। স্পিন এবং পেস দুই ধরনের বোলাররাই প্রভাব বিস্তার করেছেন। এক কথায় স্কিলে ভালো ক্রিকেটাররাই সফল হয়েছেন। অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের ক্রিকেটাররা এক্ষেত্রে অনন্য। স্কিল ও পেশাদারিত্বে কোনো ঘাটতি নেই। চাপের মুহূর্তে ভেঙে পড়তে দেখা যায় না। ক্রিকেটের তিন সংস্করণেই নিউজিল্যান্ড বর্তমানে সেরা। ২০১৯ সালে ওয়ানডে বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলেছে তারা। ৫০ ওভারের ম্যাচ টাই হলে সুপার ওভারে গড়ায় ফাইনাল ম্যাচটি। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সুপার ওভারেও টাই হয়। বেশি বাউন্ডারি মারার সুবিধা পেয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় ইংল্যান্ড। কেন উইলিয়ামসনরা শিরোপা জিততে না পারার আক্ষেপ মেটান টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল থেকে ইংলিশদের বিদায় করে। টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের প্রথম আসরের চ্যাম্পিয়ন নিউজিল্যান্ড জিততে পারে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শিরোপা।
 
কিউইদের জন্য নেতিবাচক দিক হলো, এত বছরেও বিশ্বকাপ জেতার অভিজ্ঞতা নেই। বছরের পর বছর সেমিফাইনাল থেকে বিদায় নেওয়া অভ্যাসে পরিণত করেছিল তারা। ২০১৫ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপে প্রথমবার ফাইনাল খেলে। অভিজ্ঞতার ঘাটতি থাকায় মেলবোর্নের সে ফাইনালে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে পাল্লা দিতে পারেনি। চোকার নাম ঘোচার পর নিউজিল্যান্ড এখন সবচেয়ে ধারাবাহিক ফাইনাল খেলা দল। ওয়ানডে বিশ্বকাপে টানা দ্বিতীয়বার ফাইনাল খেলে শিরোপার দাবিদার হয়ে উঠেছে। যদিও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এই প্রথম ফাইনাল খেলছে 

দলটি। বিশ্বকাপ জয়ের অভিজ্ঞতা না থাকলেও অস্ট্রেলিয়ার মতো নিউজিল্যান্ড দলটিও অভিজ্ঞ ক্রিকেটারে সমৃদ্ধ। কেন উইলিয়ামসনের মতো একজন পারফরমার অধিনায়ক আছে কিউইদের। তবে ম্যাচটি ফাইনাল হওয়ায় এবং প্রতিপক্ষ অস্ট্রেলিয়া থাকায় চ্যালেঞ্জটা অন্যরকম। তারা পাঁচবারের ওয়ানডে বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন।

নিউজিল্যান্ডকে সমীহ করলেও ফাইনাল জিততে চান অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ। তিনি বলেন, ‘এটি ফাইনাল ম্যাচ। আর প্রতিপক্ষ হিসেবে নিউজিল্যান্ড অনেক ক্যালকুলেটিভ দল। তারা অনেক পরিকল্পনা নিয়ে খেলতে নামবে। আমাদের সেভাবেই প্রস্তুত থাকতে হবে। যেকোন পরিস্থিতি মোকাবেলা করে ফাইনাল জিততে হবে এবং প্রথমবারের মত শিরোপার স্বাদ নিতে হবে।’


অন্যদিকে প্রথমবারের মত ফাইনালে উঠেই বাজিমাত করতে চায় নিউজিল্যান্ড। দলের অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন বলেন, ‘ওয়ানডে বিশ্বকাপে শেষ দুই আসরের ফাইনাল খেলার অভিজ্ঞতা আমাদের আছে। কিন্তু টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এই প্রথম ফাইনাল খেলছি আমরা। শিরোপা জিতে এই প্রথমকে স্মরনীয় করতে চাই। অস্ট্রেলিয়ার মত দলের বিপক্ষে জিততে হলে, তিন বিভাগেই তাদের চেয়ে ভালো খেলতে হবে। ম্যাচের শুরু থেকেই অসিদের উপর চাপ সৃষ্টি করতে হবে।’

টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে এগিয়ে অস্ট্রেলিয়াই। ১৪ ম্যাাচে মুখোমুখি হয়ে ৯বার জিতেছে অসিরা। পাঁচ জয় অসিদের। আর বিশ্বকাপের মঞ্চে একবার দেখা হয় অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের। সেটিতে জয় পেয়েছিলো কিউইরা। ২০১৬ সালে সুপার টেনে গ্রুপ-২এর ম্যাচে ৮ রানে জিতেছিলো নিউজিল্যান্ড।

এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে সর্বশেষ দেখা হয়েছিলো নিউজিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার। নিউজিল্যান্ড সফরে ৫ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ ৩-২ ব্যবধানে জিতে অসিরা।

নিউজিল্যান্ড দল: 

কেন উইলিয়ামসন (অধিনায়ক), টড অ্যাস্টল, ট্রেন্ট বোল্ট, মার্ক চ্যাপম্যান, এডাম মিলনে, মার্টিন গাপটিল, কাইল জেমিসন, ড্যারিল মিচেল, জেমস নিশাম, গ্লেন ফিলিপস, মিচেল স্যান্টনার, টিম সেইফার্ট, ইশ সোধি ও টিম সাউদি।

অস্ট্রেলিয়া দল: 

অ্যারন ফিঞ্চ (অধিনায়ক), অ্যাস্টন অ্যাগার, প্যাট কামিন্স, জস হ্যাজেলউড, জস ইংলিস, মিচেল মার্শ, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, কেন রিচার্ডসন, স্টিভেন স্মিথ, মিচেল স্টার্ক, মার্কুস স্টয়নিস, মিচেল সুয়েপসন, ম্যাথু ওয়েড, ডেভিড ওয়ার্নার এবং এডাম জাম্পা।