Sunday, 8 January 2023

সিলেটে গৃহবধূর ‘রহস্যজনক’ মৃত্যু


সিলেট মহানগরের তেলিহাওর এলাকার সিল ভ্যালি ক্যাসল নামক ভবনে ফারহানা হক মিলি (২৪) নামের এক গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। শনিবার (৭ জানুয়ারি) দুপুরে শয়নকক্ষ থেকে তার সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তবে এটি হত্যা না আত্মহত্যা এ নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে।

নিহত মিলি সুনামগঞ্জের জগ্ননাথপুরের সদর ইউনিয়নের মৃত সিরাজুল হকের মেয়ে ও দিরাই উপজেলার কালিয়ারখাপন গ্রামের আসকর আলীর ছেলে নুর আলমের (৩২) স্ত্রী।

পুলিশ ও মিলির পারিবারিক সূত্র জানায়, তেলিহাওর এলাকার সিল ভ্যালি ক্যাসলের তৃতীয় তলার এ-২ ইউনিটে মিলি ও মিলির বড় বোন রেহানা হক সুহেলি তাদের স্বামী নিয়ে ভাড়া থাকেন। শুক্রবার রাতে মিলি না খেয়েই তার শয়নকক্ষে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। তবে তার স্বামী একই বাসায় থাকলেও ঘুমান ভিন্ন কক্ষে। শনিবার বেলা ১১টা পর্যন্তও মিলির কক্ষের দরজা লাগানো দেখে পরিবারের সদস্যরা ডাকাডাকি করেও তার সাড়াশব্দ না পেয়ে এক পর্যায়ে একটি থাই গ্লাসের দরজা এবং কক্ষের মূল দরজা ভেঙে মিলির মরদেহ খাটের উপরে হাটু গাড়া অবস্থায় সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ওড়না দিয়ে গলায় ফাঁস দেওয়া ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান। এসময় পরিবারের সদস্যরা কোতোয়ালি থানায় খবর দিলে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।

এসময় পুলিশ মিলির স্বামী নুর আলমকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।

এদিকে, মিলির বড় বোন রেহানা হক সুহেলি জানান, সাড়ে ৪ বছর আগে নুর আলমের সঙ্গে মিলির বিয়ে হয়। এরপর থেকে রেহানা ও মিলি তাদের স্বামী নিয়ে সিল ভ্যালি ক্যাসলের ওই বাসায় ভাড়া থাকেন। কিন্তু মিলির স্বামী দৃশ্যমান কোনো চাকরি বা পেশায় জড়িত ছিলেন না। উল্টো অনলাইন জুয়া খেলে লাখ লাখ টাকা উড়িয়েছেন। এমনকি নিজের একটি ঘর বিক্রি করে ১৫ লাখ টাকা এক দিনেই জুয়া খেলায় খুইয়েছেন আলম। এসব বিষয় নিয়ে মিলি ও তার স্বামীর মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া হতো। অনেক সময় স্বামীর হাতে নির্যাতনের শিকার হতেন মিলি। এর আগেও স্বামীর হাতে নির্যাতিত হয়ে একসঙ্গে অনকেগুলো ঘুমের ওষুধ খেয়েছেন তিনি।

মিলি আত্মহত্যা করলে তো তার পা এভাবে বিছানায় থাকার কথা নয় মন্তব্য করে রেহানা বলেন- পুলিশ সুষ্ঠু তদন্তে আসল বিষয় বেরিয়ে আসবে। আমার দৃঢ় বিশ্বাস- আমার বোন এভাবে আত্মহত্যা করতে পারে না।

এ বিষয়ে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার সুদ্বীপ দাস বলেন- ওই গৃহবধূর স্বামীকে থানায় নিয়ে এসে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। নিহতের বাবার পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ দায়ের করলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 

শেয়ার করুন