Sunday, 15 May 2022

জৈন্তাপুরে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি


শাহজাহান কবির খান, জৈন্তাপুর: জৈন্তাপুরে বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ ধারন করেছে। ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে বিভিন্ন নদ-নদী দিয়ে পানি প্রবেশ অব্যাহত থাকায় নদ-নদীর পানি দ্রুতগতিতে বৃদ্ধি পাচ্ছে, বৃষ্টি থামলে নদীর পানি একটু কমলেও বৃষ্টি শুরু হওয়ার সাথে সাথে পানি আবারও বৃদ্বি পায়। পানির নিচে তলিয়ে আছে শত শত একর ফসলি জমি। উপজেলা সদরের সাথে বিভিন্ন গ্রামের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে, জরুরী প্রয়োজন মেটাতে নৌকা দিয়ে হাঁট বাজারে যাতায়াত করছে নিম্নাঞ্চলের মানুষ। নদী ভাঙনে হুমকীর মুখে গ্রামের কাচাঁ রাস্তা ও নদী তীরবর্তী এলাকার বসতবাড়ী। সারী নদীর পানি স্বাভাবিকের চেয়ে .০৫ সেঃ মিঃ উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। 

গত বুধবার রাত থেকে টানা বর্ষণ আর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার নিজপাট এবং জৈন্তাপুর ইউনিয়নের গ্রামের হাজার হাজার মানুষ এখন পানিবন্দি রয়েছেন। বেশির ভাগ কাচাঁ রাস্তা পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় বিভিন্ন গ্রাম-সহ উপজেলা সদরের সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ায় বিপাকে পড়েছে নিম্ন আয়ের মানুষজন। ভারী বর্ষণ আর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সারী নদীর পানি বিপদসীমা.০৫ সেঃ মিঃ উপর দিয়ে অতিত্রুম করছে। তবে শনিবার সকাল থেকে নদীর পানি কিছুটা কমতে দেখা গেলেও রোববার ভোর থেকে পূনরায় দ্রুতগতিতে নদীগুলোর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। 

উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে বর্তমানে নদ-নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ইতোমধ্যে পাহাড় ও নদীর তীরবর্তি লোকজনকে নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্রে সরিয়ে যেতে বলা হয়েছে। ভারী বর্ষণ অব্যাহত থাকলে বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতির আশংকা করছেন আবহাওয়াবিদরা। 

এদিকে রোববার নদ-নদীর পানি কিছুটা কমলেও হাওরের পানি বৃদ্বি অব্যাহত রয়েছে। এবারের বন্যায় উপজেরার মধ্যে সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রাস্থ হয়েছে নিজপাট ও জৈন্তাপুর ইউনিয়নের কৃষি পরিবারের মানুষজন। খামারিরা গবাদি পশুর খাদ্য নিয়ে চরম সংকটে পড়েছেন। পানিবন্দি মানুষের জন্য উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সাড়ে ১৬ মেঃ টন চাল বরাদ্ধ দেওয়া হলেও  আবহাওয়া অনুকুলে না থাকায় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থদের কাছে পৌছানো সম্ভব হচ্ছেনা।। রবিবার ভোর থেকে বন্যা প্লাবিত এলাকায় পরিদর্শণ করেছেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কামাল আহমদ, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মোঃ জয়নাল আবেদীন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল বশিরুল ইসলাম, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ বশির উদ্দিন, অফিসার ইনর্চাজ গোলাম দস্তগীর আহমদ, নিজপাট ইউ/পি চেয়ারম্যান ইন্তাজ আলী, জৈন্তাপুর ইউ/পি চেয়ারম্যান ফখরুল ইসলাম-সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল বশিরুল ইসলাম বলেছেন আবহাওয়ার তথ্য মতে এখনো প্রচুর বৃষ্টি হওয়ার আশংকা রয়েছে, নদ-নদীর পানি কিছুটা কমলেও বিপদসীমার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হওয়ার আশঙ্কা করা যাচ্ছে, পরবর্তী ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত নদীর তীরবর্তী মানুষকে নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থান করতে বলা হয়েছে। তারপরও উপজেলা প্রশাসন, উপজেলা পরিষদ এবং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানগন-সহ সংশ্লিষ্টরা  সার্বক্ষনিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে যাচ্ছেন। পানিবন্দি অসহায় মানুষের জন্য যতেষ্ট  ত্রাণ সামগ্রী বরাদ্ধ রয়েছে।

শেয়ার করুন