ফাইল ছবি |
হাওর অঞ্চলের নদ-নদীর পানি হু হু করে বাড়ছে। দুটি নদীর পানি বর্তমানে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আকস্মিক বন্যার উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে নেত্রকোনা ও কিশোরগঞ্জ জেলা। পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র এমন পূর্বাভাস দিয়েছে।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফুজ্জামান ভূঁইয়া জানিয়েছেন, সিলেট, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোণা ও হবিগঞ্জ জেলার প্রধান নদ-নদীর পানির সমতল বাড়ছে।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর ও ভারত আবহাওয়া অধিদপ্তরের গাণিতিক মডেলের তথ্য অনুযায়ী, রোববার (১৭ এপ্রিল) নাগাদ দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল এবং তৎসংলগ্ন ভারতের আসাম, মেঘালয় ও অরুণাচল প্রদেশের কতিপয় স্থানে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।
এই অবস্থায় দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সিলেট, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা, হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজার জেলার প্রধান নদ-নদীগুলোর পানির সমতল কতিপয় স্থানে ভারী বৃষ্টিপাতের পরিপ্রেক্ষিতে দ্রুত বাড়তে পারে। ফলে, সুরমা নদী সুনামগঞ্জ জেলায় বিপৎসীমার কাছাকাছি অবস্থান করতে পারে এবং ধনু-বাউলাই নদী নেত্রকোণা জেলার কতিপয় পয়েন্টে বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে।
সোমবার নাগাদ সিলেট, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা ও কিশােরগঞ্জ জেলায় আকস্মিক বন্যার উচ্চ ঝুঁকি রয়েছে।
বর্তমানে সুরমা নদী পানি কানাইঘাটে বিপৎসীমার ২২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে, সিলেটে ১৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আর গোয়াইন নদীর পানি সারিঘাটে বিপৎসীমার ৮০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে এবং গোয়াইনঘাটে বিপৎসীমার ৭২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
পাউবো জানিয়েছে, বিভিন্ন নদ-নদীতে তাদের পর্যবেক্ষণাধীন ৩৯টি স্টেশনের মধ্যে শনিবার (১৬ এপ্রিল) পানির সমতল বেড়েছে ২৬টিতে, কমেছে ১২টিতে, একটির পানির সমতল অপরিবর্তিত আছে। এদিকে আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, দেশের উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ঝড়ের সঙ্গে বজ্রসহ বৃষ্টিপাত হতে পারে। এছাড়া দেশের উত্তর-দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চলের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে।
রংপুর, ময়মনসিংহ, সিলেট এবং কুমিল্লা অঞ্চলসমূহের ওপর দিয়ে পশ্চিম/উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫-৬০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ীভাবে দমকা/ঝড়াে হাওয়াসহ বৃষ্টি/বজ্রবৃষ্টি হতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দরগুলোকে এক নম্বর নৌ সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। আবহাওয়াবিদ ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক জানিয়েছেন, পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ হিমালয়ের পাদদেশীয় পশ্চিমবঙ্গ এবং তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে।
মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ অবস্থান করছে দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে। এ অবস্থায় রোববার (১৭ এপ্রিল) সন্ধ্যা পর্যন্ত ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রংপুর, ঢাকা, খুলনা ও চট্টগ্রাম বিভাগের দু'এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা/ঝড়াে হাওয়ার সঙ্গে প্রবল বিজলী চমকানােসহ বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।
এছাড়া রাজশাহী, পাবনা, নওগাঁ ও যশাের জেলাগুলোর ওপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে। সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকবে। ঢাকায় দক্ষিণ/দক্ষিণ-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় বাতাসের গতিবেগ থাকবে ১০-১৫ কিলোমিটার, যা অস্থায়ীভাবে দমকা আকারে পশ্চিম/উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৪০-৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত ওঠে যেতে পারে। শনিবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে রাজশাহীতে, ৩৮ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৪ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হয়েছে সিলেটে, এক মিলিমিটার।
খবর বিভাগঃ
কুশিয়ারা নিউজ
সিলেট
সুনামগঞ্জ