Saturday 26 February 2022

চন্দরপুরে ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার হওয়া শিউলীর দাফন সম্পন্ন


গোলাপগঞ্জের চন্দরপুরে ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা সেই শিউলী বেগমের জানাযা শেষে দাফন সম্পন্ন হয়েছে। শনিবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) বাদ সন্ধ্যায় লামা-চন্দরপুর শাহী ঈদগাহ ময়দানে তার জানাযার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। জানাযা শেষে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।

এর আগে ময়না তদন্ত শেষে শিউলী বেগমের মরদেহ নিয়ে আসা হয় তার পিত্রালয়ে। তার পিতার বাড়ি একই এলাকার লামা-চন্দরপুর গ্রামে। সে লামা-চন্দরপুর গ্রামের হারুন মিয়ার মেয়ে।

উল্লেখ্য, গতকাল (শুক্রবার) রাত ৮টার দিকে শিউলী বেগমের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে গোলাপগঞ্জ মডেল থানা পুলিশ। শিউলী বেগম(২৫) চন্দরপুর গ্রামের আমকোনী বাড়ির ইকবাল হোসেনের স্ত্রী। তাদের দুটি ফুটফুটে কন্যা সন্তান রয়েছে।

এদিকে, এ ঘটনাটি আত্মহত্যা নাকি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড তা নিয়ে দেখা দিয়েছে সংশয়। ইকবাল হোসেনের পরিবার ঘটনাটি আত্মহত্যা দাবী করলেও বিপরীত দাবী জানিয়েছেন শিউলী বেগমের পরিবার। আর প্রত্যক্ষদর্শী-সহ এলাকাবাসী রয়েছেন রহস্যের বেড়াজালে।

স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা যায়, শিউলী বেগম ও ইকবাল হোসেনের মাঝে পারিবারিক কলহ ছিলো। এমনকি তা তালাক পর্যন্ত গড়ায়। তালাকের ঘটনায় প্রায় দুই মাস শিউলী বেগম তার পিত্রালয়ে ছিলেন। পরবর্তীতে উভয় পরিবার ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ সালিশ-বৈঠকের মাধ্যমে এ সমস্যা সমাধান করলে গত শুক্রবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) শিউলী বেগম তার স্বামীর বাড়িতে ফিরেন। স্বামীর বাড়ি ফেরার এক সপ্তাহের মাথায় (২৫ ফেব্রুয়ারি) রহস্য ঘেরা ঝুলন্ত লাশ হলেন শিউলী বেগম(২৫)।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শুক্রবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) রাত ৮টায় গোলাপগঞ্জ মডেল থানা পুলিশ এসে ঘরের দরজা ভেঙ্গে শিউলী বেগমের লাশ উদ্ধার করে। এসময় শিউলী বেগমের নিথর দেহ ফ্যানের সাথে ঝুলছিলো। তবে দু'পা বিছানায় লেপ্টে থাকায় সন্দেহের উদ্রেক দেখা দিয়েছে। এছাড়া শিউলী বেগমের স্বামী ইকবাল হোসেন ও দেবর রাজন আহমদ ঘটনার সময় বাড়িতে থাকলেও পুলিশের আগমন এবং লাশ উদ্ধারের পূর্বে বাড়ি থেকে পালিয়ে যান। এতে এলাকার লোকজনের মাঝে রহস্য ঘনীভূত হয়।

এদিকে ইকবাল হোসেনের পরিবারের দাবী, ইকবাল গত বৃহস্পতিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) ব্যবসার জন্য বড়লেখা উপজেলার দাসের বাজার গিয়েছিলেন। শুক্রবার সন্ধ্যার কিছু পূর্বে সে বাড়িতে ফিরে। তবে ঠিক কি কারণে ইকবাল হোসেন ও রাজন আহমদ পালিয়ে গেলেন তার সদুত্তর মিলেনি।

পরিবার সূত্র আরোও জানায়, শুক্রবার সন্ধ্যার কিছু পূর্বে ইকবাল হোসেন বাড়িতে আসলে শিউলী বেগমকে তার বন্ধ কক্ষে ডাকাডাকি করেন। এসময় শিউলী বেগম ঘুমিয়ে আছেন মনে করে ইকবাল আবারও বাড়ির বাইরে চলে যান। পরবর্তীতে তার পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা ঘরের ভেতর শিউলী বেগমের ঝুলন্ত লাশ দেখতে পেয়ে চিৎকার করেন। এসময় আশপাশের লোক জড়ো হলে পুলিশে খবর দেয়া হয়। পরে গোলাপগঞ্জ মডেল থানার এসআই মোফাখখারুল ইসলাম সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘরের দরজা ভেঙ্গে তার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেন।

তবে শিউলী বেগমের পরিবারের দাবী, তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে ফ্যানের সাথে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত মামলার প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান তারা।

গোলাপগঞ্জ মডেল থানার এসআই মোফাখখারুল ইসলাম লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে জানান, লাশের অবস্থা দেখে এটাকে প্রাথমিকভাবে আত্মহত্যা বলেই মনে হচ্ছে। ময়না তদন্ত শেষে ঘটনার সত্যতা জানা যাবে।

শেয়ার করুন