বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খানের পদ বাতিল হতে পারে। সাধারণ সম্পাদক পদের পরাজিত প্রার্থী নিপুণের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় হয়ে বুধবার আপিল বিভাগের কাছে এ বিষয়ে দিকনির্দেশনা এসেছে।
গত ২৮ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত শিল্পী সমিতির নির্বাচনের ফল ২৯ তারিখ ঘোষণা করা হয়। এরপর জায়েদ খানের বিরুদ্ধে ভোট কেনার অভিযোগ এনে সেই ফল বাতিলের জন্য আপিল বিভাগের কাছে আবেদন করেছিলেন নিপুণ। এ সময় কার্যকরী পরিষদের সদস্য চুন্নুর পদটিও বাতিলের আবেদন করেছিলেন তিনি।
নির্বাচনের ফল প্রকাশের পর সংবাদ সম্মেলনে জায়েদ খানের বিরুদ্ধে নানা বিস্ফোরক অভিযোগ তোলেন নিপুণ। শুধু মৌখিক অভিযোগই নয়, সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগের স্বপক্ষে প্রমাণও হাজির করেন নিপুণ। জায়েদ খান ভোটে কারচুপি করেছেন অভিযোগ তুলে অজ্ঞাত কারো সঙ্গে তার গোপন স্ক্রিনশট দেখান। এছাড়া এক ভিডিও দেখিয়ে জায়েদ খান এক ভোটারকে টাকা দিচ্ছেন বলে দাবি করেন নিপুণ।
অবশ্য জায়েদ খানও চুপ করে বসে ছিলেন না। তিনিও নিপুণের বিরুদ্ধে ভুয়া প্রমাণ হাজিরের অভিযোগ তোলেন।
নির্বাচন কমিশনার পীরজাদা শহীদুল হারুনের বিরুদ্ধেও অভিযোগ তোলেন নিপুণ।
জায়েদ ও চুন্নুর প্রার্থিতা বাতিল চেয়ে আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যান সোহানুর রহমান সোহানের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন নিপুণ। সেই অভিযোগ আমলে নিয়ে শিল্পী সমিতির নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খান ও কার্যনির্বাহী সদস্য চুন্নুর প্রার্থিতা বাতিলের দিকনির্দেশনা সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর দেওয়া এক চিঠিতে দিকনির্দেশনা চেয়েছেন সোহানুর রহমান।
এ বিষয়ে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সমাজসেবা অধিদপ্তর জানিয়েছে, ১৯৬১ সালের সেচ্ছাসেবী সংস্থা নিবন্ধন ও নিয়ন্ত্রণ অধ্যাদেশ ১৯৬১-এ বলা আছে, এই প্রতিষ্ঠানের আওতায় নিবন্ধিত কোনো সংস্থা বা সংগঠনের নির্বাচন নিয়ে তদন্তে যদি অনিয়ম পাওয়া যায়, তাহলে কমিটি বাতিল করে প্রশাসক নিয়োগের ব্যবস্থা আছে। গঠনতন্ত্রে যদি সমাধান পাওয়া না যায়, সে ক্ষেত্রে আইনের দ্বারস্থ হওয়া যাবে।
এদিকে সমিতির গঠনতন্ত্রে শপথ গ্রহণের বাধ্যবাধকতা না থাকায় নিজের দায়িত্ব নিজেই বুঝে নিয়েছেন জায়েদ খান। এক সংবাদ সম্মেলনে সম্প্রতি এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমাদের গঠনতন্ত্রের কোথাও শপথের কথা উল্লেখ নেই। আনুষ্ঠানিকভাবে বিদায়ী কমিটি নতুন কমিটিকে ক্ষমতা বুঝিয়ে দেবে। যেহেতু আমি নিজেই সেক্রেটারি, তাই আমারটা আমি বুঝে নিয়েছি।
এ ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনার পীরজাদা শহীদুল হারুন বলেন, সাধারণ সম্পাদক পদটি নিয়ে বিতর্ক চলমান থাকায় ক্ষমতা বুঝিয়ে দিতে একটু সময় লাগবে।
তবে বুধবার ঢাকা জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. রকনুল হক স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির গঠনতন্ত্র অনুসারে নির্বাচনের আপিল বোর্ড চূড়ান্ত ক্ষমতাপ্রাপ্ত। অর্থাৎ এখন আপিল বোর্ডের সিদ্ধান্তের ওপরেই নির্ভর করছে জায়েদ ও চুন্নুর পদ।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে চিত্রনায়ক জায়েদ খান বলেন, আপিল বিভাগের পুনর্গণনা শেষে নিপুণ তার পরাজয় মেনে নিয়ে স্বাক্ষর করে গেছেন। নির্ধারিত সময়ের পরে এ আবেদন মন্ত্রণালয়ের যেতে পারে না। এটি সম্পূর্ণ অবৈধ প্রক্রিয়ায় হয়েছে।
অন্যদিকে, দুই প্যানেলের পাল্টাপাল্টি অভিযোগের পরও বুধবার নব-নির্বাচিত সভাপতি ইলিয়াস কাঞ্চনের সঙ্গে একই মঞ্চে দেখা গেছে জায়েদ খানকে। দেশের একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলের শোতে হাজির হয়ে সদ্য সমাপ্ত নির্বাচনের ব্যাপারে সেখানে উপস্থাপকদের সঙ্গে নানা বিষয়ে কথা বলেন তারা। এক ফাঁকে ফুল হাতেও একসঙ্গে ছবি তুলতেও দেখা যায় এ দুই তারকাকে।
খবর বিভাগঃ
বিনোদন