স্পোর্টস ডেস্কঃ বার্সেলোনা ছাড়লেন মেসি। যা এখন পুরনো খবর। রোববার রাতে বিদায়ী সংবাদ সম্মেলনে আর্জেন্টাইন খুদেরাজের কান্না শুধু তার ভক্তদেরই নয় যে কারো হৃদয়ে রক্তক্ষরণ ঘটিয়েছে।
অনেকেই বিস্মিত, কেউ কি একট ক্লাববে এতো ভালোবাসতে পারে? ক্লাবের দৈন্যদশায় নিজের বেতনের ৫০ শতাংশই কমিয়ে হলেও চুক্তি নবায়ন করতে চেয়েছিলেন মেসি। তবুও দুর্ভাগ্য যে, এতটা ছাড় দেওয়ার পরও শেষ পর্যন্ত প্রিয় ক্লাবকে ছাড়তেই হলো মেসির
তবে এর পাশাপাশি একটি প্রশ্নও বেশ জোরালো হয়ে সামনে এসেছে। তাহলো - মেসি কি পারতেন না, ১০০ শতাংশই ছাড়া দিতে? এতো আবেগ, এতো ভালোবাসা থাকলে তিনি কেন বিনা বেতনে খেলতে রাজি হননি? তাহলেই তো ঝামেলা চুকে যেত। মেসিকেও বার্সেলোনা ছাড়তে হতো না। বরং এতে বার্সা তার ঋণের বোঝা আরো কমাতে পারত।
বিশেষকরে মেসির সমালোচনাকারী বা দুর্মুখোরা এমনটা বেশি বলছেন।
কিন্তু চাইলেই কি তা করতে পারতেন মেসি? সেটির ব্যাখ্যা ইতোমধ্যে খুঁজে বের করে স্প্যানিশ ফুটবলবিষয়ক ওয়েবসাইট ফুটবল এসপানা। তাদের বিশ্লেষণ বলছে, মেসি চাইলেও বিনা বেতনে তো দূরের কথা ৭০ শতাংশ কম বেতনেও খেলতে পারতেন না! এটা লিগ কর্তৃপক্ষের রীতিবিরুদ্ধ।
ইংলিশ দৈনিক ডেইলি মিররের সাংবাদিক ও ‘দ্য ফ্রাইং প্যান অব স্পেন’ নামের বইয়ের লেখক কলিন মিলারের একটি টুইটকে উদ্ধৃত করে এর ব্যাখ্যা দিয়েছে ফুটবল এসপানা।
ফুটবল এসপানা বলছে , বিনা বেতনে বা অস্বাভাবিক কম বেতনে চুক্তি করা বাস্তবে সম্ভব নয়।
মিলার তার টুইটে লিখেছেন, ‘স্প্যানিশ আইন অনুসারে,যে কোনো নতুন চুক্তিতে খেলোয়াড়ের বেতন তার আগের চুক্তির বেতনের ন্যূনতম ৫০ শতাংশ হতে হয়। আর্থিকভাবে ক্লাবগুলো যাতে কোনো দুর্নীতি করতে না পারে সে জন্যই এই নিয়ম। সে হিসেবে বার্সেলোনায় মেসির বিনা বেতনে খেলা আইনত অবৈধ। ’
এ তো গেল নিয়মের প্রতিবন্ধকতা। কিন্তু বিবিসি স্পোর্টসের সাংবাদিক রাজ চোহান বলছেন, সেটা করা গেলেও চুক্তি নবায়ন করতে পারতেন না মেসি।
এর ব্যাখ্যায় এক টুইটে রাজ চোহান লিখেছেন, ‘বার্সার আয়-বেতনের অনুপাত এই মুহূর্তে প্রায় ১১৫ শতাংশ। মেসিকে এক পয়সাও না দিলে এটা হবে ৯৫ শতাংশ। আর লা লিগার বেতনের সীমা নির্দিষ্ট করা আছে ৭০ শতাংশে। তাই মেসি যদি বিনা বেতনেও খেলতে চাইত, বার্সা তাকে নিবন্ধন করাতে পারত না।’
এর মানে মেসির বিষয়টি ছাড়াও বার্সা কে আরো বেশ কিছু ঝামেলা পোহানো বাকি।
ইউরোপিয়ান ফুটবলের ওয়েবসাইট ইউরোস্পোর্টও একই ব্যাখ্যা দিয়েছে। তাদের কথায়, মেসির সঙ্গে চুক্তি তো দূরের কথা গ্রিজমান, কুতিনিও, উমতিতি, পিয়ানিচ, ব্রাথওয়েইটদের কাউকে অন্য ক্লাবে বিক্রি করার আগপর্যন্ত বার্সা নতুন চার খেলোয়াড়কে (আগুয়েরো, মেম্ফিস, এরিক গার্সিয়া, এমারসন রয়াল) নিবন্ধন করানোর উপায় নেই।