Saturday 7 August 2021

যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে ব্যারিস্টার সুমনকে অব্যাহতি



নিউজ ডেস্কঃ আওয়ামী লীগের দলীয় কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে রাজনৈতিক স্লোগান ও পুষ্পস্তবক অর্পণ করা শরীয়তপুরের পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আক্তার হোসেনের সমালোচনা করায় সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনকে আওয়ামী যুবলীগ থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হয়েছে।

ব্যারিস্টার সুমন কেন্দ্রীয় যুবলীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। তাঁকে অব্যাহতি দেওয়ার বিষয়টি শনিবার (৭ আগস্ট) রাতে সিলেটভিউ-কে কেন্দ্রীয় যুবদলীগের একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে।

২০২০ সালের নভেম্বরে আওয়ামী লীগের অন্যতম সহযোগী সংগঠন যুবলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটির আইন বিষয়ক সম্পাদক করা হয় সুপ্রিম কোর্টের আলোচিত আইনজীবী ও যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের সাবেক প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনকে।


পদ পাওয়ার এক বছর পূর্ণ হওয়ার আগেই সমালোচিত হয়ে পদ হারালেন সুপ্রিম কোর্টের এই আইনজীবী।

উল্লেখ্য, সামাজিক নানা সমস্যা নিয়ে ফেসবুক লাইভ করে আলোচিত ব্যারিস্টার সুমন। ফেসবুকে বিভিন্ন সামাজিক সমস্যা নিয়ে সরব থাকেন তিনি। সর্বশেষ আওয়ামী লীগের দলীয় কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে রাজনৈতিক স্লোগান ও পুষ্পস্তবক অর্পণ করা শরীয়তপুরের পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আক্তার হোসেনের তীব্র সমালোচনা করেছেন সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। একইসঙ্গে তার বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।

শুক্রবার (৬ আগস্ট) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে লাইভে তিনি এ অনুরোধ জানান।

লাইভে ব্যারিস্টার সুমন বলেন, ‘শেখ কামাল সাহেবের জন্মদিনে শরীয়তপুরের পালং থানার ওসি আক্তার হোসেনের আওয়ামী লীগের দলীয় স্লোগান দেয়ার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। এই জিনিসটা দেখার পর আমার কাছে মনে হয়েছে দু-একটা কথা বলা দরকার। আওয়ামী লীগের স্লোগান দেয়ার মানুষ কী এতই কম যে একজন ওসি সাহেবের এই স্লোগান দিতে হবে। আমি খেয়াল করে দেখলাম যে উনি বলছেন আবেগ থেকেই স্লোগান দিয়েছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমার কথা হচ্ছে, আপনি যখন সরকারি দায়িত্বে থাকবেন কিংবা রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে থাকবেন, তখন দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে আবেগ দেখানোর সঙ্গে সঙ্গে কিন্তু আপনার বিরুদ্ধে পানিশমেন্ট নিয়ে আসা উচিত। কিন্তু তিনি এখনো ওই জায়গাতে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত আছেন।’

আইনজীবী সুমন বলেন, ‘আবেগ দেখানো ভালো। কিন্তু আপনি যখন আবেগ দেখাতে গিয়ে সরকারকে প্রশ্নবিদ্ধ করে দিলেন, তখন সরকারের কিন্তু অনেক ক্ষতি করে দিলেন। অনেক ওসি এবং পুলিশ কর্মকর্তারা দলমতের ঊর্ধ্বে দেশের সেবা করে যাচ্ছেন। এই ওসির কর্মকাণ্ডের কারণে তাদের অবস্থাটা কোথায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে?’

সবাইকে সতর্ক করে ব্যারিস্টার সুমন বলেন, ‘আপনারা জানেন যে সামান্য চাকরিজীবী লীগের কারণে সরকার কতো কঠোর। হেলেনা জাহাঙ্গীরকে সরকার আটক করেছে এমন ভুঁইফোঁড় চাকরিজীবী লীগ সংগঠন করায়। এখন এমন অবস্থা হইছে এ ধরনের ওসি সাহেবরা দুদিন পরে বলবেন একটি পুলিশ লীগ করা যায় কি-না।’

তিনি বলেন, ‘সতর্ক হওয়ার সবচেয়ে ভালো সময় এখন। পঁচাত্তর সালে আমরা সতর্ক হতে পারিনি বলেই বঙ্গবন্ধুকে হারিয়েছি। আপনি যদি দলকে সত্যি ভালোবাসেন, তাহলে দলের প্রতি এমন কোনো আবেগ দেখাতে পারবেন না, এমন কোনো কাজ করতে পারবেন না, যে কারণে দল ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আপনি যদি পুলিশ ডিপার্টমেন্টের হয়ে কাজ করবেন, তখন এমন কোনো আবেগ দেখাতে পারবেন না, এমন কোনো কাজ করতে পারবেন না, যে কারণে পুলিশ ডিপার্টমেন্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তিনি পুরো পুলিশ ডিপার্টমেন্টকে বিব্রত করেছেন।’

ব্যারিস্টার সুমন আরও বলেন, ‘আমি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, আইজিপির কাছে অনুরোধ করব রাষ্ট্র-দল সবগুলাকে একাকার করার জন্য এবং বিশেষত এই সরকারকে কলঙ্কিত করার জন্য, বিব্রত করার জন্য, পুলিশ ডিপার্টমেন্টকে বিব্রত করার জন্য তার (ওসির) বিরুদ্ধে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব অ্যাকশন নিতে হবে। 

শেয়ার করুন