নাটোর জেলার সাতটি উপজেলার ৫২টি ইউনিয়ন ও ৮টি পৌরসভায় সারা দেশের মতো চলছে করোনার গণটিকা কার্যক্রম। শহরের একটি কেন্দ্রে পর্যাপ্ত টিকা না পেয়ে টিকা প্রদানকারীদের ঘরে আটকে রাখে জনতা। পরে ম্যাজিস্ট্রেট গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
শনিবার সকাল ৯টায় সদর উপজেলার শিবদুর গ্রাম সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গণটিকা কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন স্থানীয় সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুল এবং জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ।
নাটোর পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের শেরে বাংলা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে করোনার টিকা না পেয়ে হট্টগোল শুরু করে সাধারণ মানুষ। সকাল ৯টা থেকে এই কেন্দ্রে মোট ২০০জনকে টিকা প্রয়োগ শুরু হয়। কিন্তু বেলা ১২টার মধ্যেই নির্ধারিত টিকা শেষ হয়ে যায়। এরপরই টিকা না পেয়ে শুরু হয় হট্টগোল।
দুই থেকে তিন ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকে টিকা না পেয়ে হট্টগোল শুরু করেন নারী-পুরুষরা। টিকা শেষ হওয়ার পরও দেড় থেকে দুই’শ নারী-পুরুষ টিকার জন্য অপেক্ষা করেন। এসময় বিক্ষুব্ধ লোকজন স্বাস্থ্য কর্মীদের স্কুলের কক্ষে আটকে রাখে। পরে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জুয়েল আহমেদ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
বিক্ষুব্ধ নারী পুরুষ বলেন, কতজনকে টিকা দেওয়া হবে, সে বিষয়ে ওয়ার্ডবাসীদের কোনো স্পষ্ট ধারণা দেওয়া হয়নি। জাতীয় পরিচয়পত্র নিয়ে গেলেই টিকা দেওয়া হবে, এমন ঘোষণার কারণে সবাই হুমড়ি খেয়ে পড়েছে। কিন্তু ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকার পর স্বাস্থ্যকর্মীরা বলছে টিকা শেষ। তাহলে কেন দাঁড়িয়ে রাখা হল। তাছাড়া পরবর্তীতে কোনো তারিখে টিকা দেওয়া হবে তারও কোনো নির্দেশনা নেই।
স্থানীয় কাউন্সিলর নান্নু শেখ জানান, বরাদ্দের চেয়ে লোকজন বেশি যাওয়ার কারণে এই হট্টগোল হয়েছে। পরবর্তীতে যাতে হট্টগোল না হয়, সেজন্য টোকেন সিস্টেম করা হবে।
নাটোর পৌরসভার মেয়র উমা চৌধুরী জানান, টিকা প্রয়োগের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ছিল স্থানীয় কাউন্সিলরা। পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডের ৩নং ওয়ার্ড বাদে কোথাও কোনো সমস্যা হয়নি। ৩নং ওয়ার্ডে অব্যবস্থাপনার কারণে এই সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। পরবর্তীতে এই ধরনের হট্টগোল যাতে না হয়, সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে, জেলার ৫২টি ইউনিয়ন এবং ৮টি পৌরসভায় গণটিকা প্রয়োগ শুরু হলেও কোথাও মানা হয়নি স্বাস্থ্যবিধি। সরেজমিনে পৌরসভার তিনটি টিকা কেন্দ্র এবং ইউনিয়ন টিকা কেন্দ্রে খোঁজ নিয়ে এমন চিত্র ফুটে উঠেছে। গাদাগাদি করে লাইনে দাঁড়িয়ে টিকা নিতে দেখা গেছে নারী-পুরুষদের। স্বাস্থ্যবিধি না মানার কারণে করোনা ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন সচেতন অনেক মানুষ।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ বলেন, উৎসবমুখর পরিবেশে টিকা গ্রহণের কারণে স্বাস্থ্যবিধি মানানো সম্ভব হয়ে উঠেনি। পরবর্তীতে যাতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে টিকা প্রয়োগ করা যায়, সে বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হবে।
খবর বিভাগঃ
বাংলাদেশ