Friday, 27 August 2021

এড. জামানকে জেলা বিএনপি’র আহবায়কের বিরূপ মন্তব্য, বিয়ানীবাজার বিএনপির প্রতিক্রিয়া-বিবৃতি



নিজস্ব প্রতিবেদকঃ কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক এডভোকেট সামসুজ্জামান জামানকে অবমূল্যায়ন করে সিলেট জেলা বিএনপির আহবায়ক কামরুল হুদা জায়গীরদারের বিরূপ মন্তব্যে বিয়ানীবাজার উপজেলা বিএনপির নেতাকর্মীদের মাঝে ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়।

কামরুল হুদা জায়গীরদারের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানাতে শুক্রবার উপজেলা বিএনপির জরুরী বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বিয়ানীবাজার উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মোঃ নজমুল হোসেন পুতুলের সভাপতিত্বে এবং সাবেক সাধারণ সম্পাদক ছিদ্দিক আহমদের পরিচালনায় বিএনপির নেতৃবৃন্দ বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা করে গণ মাধ্যমে বিবৃতি প্রদান করেছেন।

 
উপজেলা বিএনপির বিবৃতি-

কয়েকদিন আগে ত্যাগী নেতাকর্মীদের অবমূল্যায়ন করে সিলেট জেলা ও মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের কমিটি করা হয়েছে। তাতে সিলেটের বিএনপির ত্যাগী নেতা অ্যাডভোকেট শামসুজ্জামান জামানের মতামতকে উপেক্ষা করা হয়েছে। যোগ্য ও ত্যাগী নেতাকর্মীদের কমিটিতে না রাখায় ক্ষুব্ধ হয়ে তিনি দল ত্যাগ করেছেন । সংবাদ সম্মেলনে পদত্যাগের কারণ তিনি সুস্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা করেছেন।

দেশ মাতৃকার টানে এবং জাতীয়তাবাদী চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে ছাত্র রাজনীতি থেকে শুরু করে দীর্ঘ ৩৬ বছর ধরে তৃণমুলের নেতাকর্মীদেরকে নিয়ে রাজনীতি করছেন এডভোকেট জামান। দলের দুর্দিন থেকে শুরু করে আজ-অব্দি তিনি মাঠের তৃণমুলের নেতাকর্মীদের প্রাণ হয়ে আছেন। তিনি ড্রয়িং রুমের কোন রাজনীতিবীদ নন, এসি রুমের কোন নিস্ক্রিয় নেতা নন। তিনি আন্দোলন সংগ্রামের সম্মুখ সারির যোদ্ধা। বিএনপির শুরু থেকে দলকে শক্তিশালী করার জন্য অক্লান্ত ত্যাগ পরিশ্রম করেছেন। দলের দুর্দিনে সামনের কাতার থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। দলের প্রয়োজনে জীবন বাজি রেখেছেন। তাঁর হাত ধরেই সিলেটে স্বেচ্ছাসেবক দল শক্তিশালী হয়ে ওঠে। তারও আগে ছাত্রদল এবং যুবদলকেও একইভাবে সিলেটে শক্তিশালী করতে কাজ করেন জামান। এডভোকেট জামান এমন একজন নিবেদিতপ্রাণ রাজনৈতিক সংগঠক, যিনি আন্দোলন-সংগ্রামকেই জীবনের ব্রত হিসেবে গ্রহণ করেছেন।
 
এডভোকেট শামসুজ্জামান জামানের পদত্যাগের বিষয়ে সিলেটের স্থানীয় বিভিন্ন প্রিন্ট এবং অনলাইন পত্রিকার সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে জেলা বিএনপির আহবায়ক কামরুল হুদা জায়গীরদার বিরূপ মন্তব্য করে তার অযোগ্যতার পরিচয় দিয়েছেন। তাঁর এই মন্তব্যে বিয়ানীবাজার উপজেলা বিএনপি চরমভাবে ব্যথিত, মর্মাহত হয়েছে।

এডভোকেট শামসুজ্জামান জামান বর্তমান সরকারের শাসনামলে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলনসহ সরকারবিরোধী বিভিন্ন আন্দোলনে নেতৃত্ব দিতে গিয়ে ৩৫টি মামলার আসামি হয়েছেন। জেনারেল এরশাদের সামরিক শাসনের অবসানের লক্ষ্যে ১৯৯০-এর গণ-আন্দোলনে তাঁর সাহসী ভূমিকা সর্বজনবিদিত। ওয়ান ইলিভেনের সময় আর পরে ক্ষমতায় আসা আওয়ামী লীগের শত নির্যাতন উপেক্ষা করে জামান খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য লড়ে গেছেন।

 
এডভোকেট জামান দলের ভিতরের বিভিন্ন বিশৃঙ্খলা, বিভিন্ন হঠকারী সিদ্ধান্তের কারনে রাগে ক্ষোভে দল ত্যাগ করেছেন। জামান ব্যক্তিগত কোন কারণে দল ত্যাগ করেননি। দল ত্যাগ করে অন্য কোন দলে যোগদান করেননি। এডভোকেট জামানের পদত্যাগের পর জেলা বিএনপির আহবায়ক কামরুল হুদা জায়গীরদার বিভিন্ন মিডিয়ায় এডভোকেট শামসুজ্জামান জামানকে অবহেলা, তুচ্ছ, তাচ্ছিল্য করে বলেন (কয়েকজনের পদত্যাগের কারনে দলে কোন প্রভাব পড়বেনা) অবহেলা মারাত্মক একটি অপরাধ। কাউকে বা কোন কিছুকে অবহেলা, অবজ্ঞা, তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে মন্তব্য করলে নিজেকে আরো তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে মন্তব্য করার জন্য হাজার জন তৈরী হবে। অবহেলা করা মানুষগুলো একসময় বিশাল আকার ধারণ করে ফিরে আসে।

প্রায় ১০ বছর পর এডভোকেট জামান সম্প্রতি সব মামলা থেকে জামিন পেয়ে মুক্ত হয়েছেন। বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এম ইলিয়াস আলী গুমের পর থেকে আন্দোলন করতে গিয়ে একের পর এক মামলার আসামি হয়েছেন। এডভোকেট সামসুজ্জামান রাজনীতি করতে গিয়ে সব সময় দলের এবং কর্মীদের স্বার্থ এমনকি সিলেট অঞ্চলের স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিয়েছেন। সত্য ও ন্যায়ের পথে অবিচল থেকেছেন। সব ধরনের ভয়-ভীতি ও লোভ-লালসাকে উপেক্ষা করে দেশপ্রেম, রাজনৈতিক দূরদর্শিতা, সততা ও সাহসিকতা তাকে এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছে।
 
দলের এ দুঃসময়ে তার নেতৃত্ব খুবই প্রয়োজন। সিলেটে বিএনপির রাজনীতিতে তার বিকল্প হতে পারে না। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলনের স্বার্থে এবং সিলেটের রাজনীতিকে রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়ন থেকে বাঁচাতে জননেতা এডভোকেট সামসুজ্জামান জামানকে আমরা বিএনপির রাজনীতিতে ফিরিয়ে আনার দাবি জানাচ্ছি। এই ত্যাগী নেতার প্রতি বিয়ানীবাজার উপজেলা বিএনপির ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা এখনো আছে।আমরা মনে করি এডভোকেট জামান তার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে আবার আমাদের মাঝে ফিরে আসবেন। দলে তার অবদান, ত্যাগ পরিশ্রম উল্লেখ্য করার মতো। কোন অবস্থাতেই অবহেলা করার মতো নয়। কাজেই বিএনপি কিংবা অংঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ এডভোকেট শামসুজ্জামান জামানের পদত্যাগের বিষয়ে মন্তব্য করার সময় আরো সর্তক হবেন।

সভায় উপস্থিত ছিলেন সাবেক সহ সভাপতি মোঃ আলী হাসান, মুজিবুল ইসলাম তাজুল, মোঃ আব্দুল করিম, মাসুক আহমদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এম সাইফুর রহমান, সহসাধারণ সম্পাদক মোঃ ছরওয়ার হোসেন, তিলপারা ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি সাইফুল ইসলাম শায়েখ, উপজেলা বিএনপির সাবেক সহসাধারণ মোঃ খছরুজ্জামান খছরু, মোঃ জিল্লুর রহমান সিদ্দিকি, মোঃ আলাই উদ্দিন আলাই, সেলিম আহমদ, মোঃ লিয়াকত আলী, মোঃ হাফিজুর রহমান, মোঃ আব্দুস ছালাম, প্রচার সম্পাদক মোঃ কামাল হোসেন, সহ প্রচার সম্পাদক মোঃ তামভির হোসেন, দফতর সম্পাদক সাইফুল ইসলাম খায়রুল ইসলাম, সহ-দফতর সম্পাদক মোঃ আবুল হোসেন, সহ গ্রাম সরকার সম্পাদক মোঃ জাবেদুল হক, অর্থ বিষয়ক সম্পাদক হাজী মোঃ রফিকুল ইসলাম, শ্রম বিষয়ক সম্পাদক মোঃ আব্দুল জব্বার,, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক মোঃ আব্দুল বাছিত, সহ স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক শাহজাহান আহমদ, সদস্য মোঃ আব্দুর রব, ছাদ উদ্দিন সুনা মিয়া প্রমুখ।

শেয়ার করুন