Sunday 8 August 2021

বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের ৯১তম জন্মদিন আজ



কুশিয়ারানিউজ ডেস্কঃ আজ ৮ আগস্ট, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহধর্মিণী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মমতাময়ী মা বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের ৯১তম জন্মদিন। 

১৯৩০ সালের ৮ আগস্ট গোপালগঞ্জের টুঙ্গীপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন এই মহীয়সী নারী। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের কালরাতে নিষ্ঠুর, বর্বরোচিত হত্যাযজ্ঞের শিকার হয়ে তিনি শাহাদাৎ বরণ করেন। মাত্র ৪৫ বছর বয়সে স্বামীর সহযাত্রী হয়ে তিনি পৃথিবী থেকে বিদায় নেন। 


তাঁর ডাক নাম ছিল রেনু। ছোটবেলায় বাবা-মাকে হারিয়ে স্বজনদের সঙ্গে বেড়ে উঠেন তিনি। মাত্র ৩ বছর বয়সে বাবা শেখ জহুরুল হক ও ৫ বছর বয়সে মা হোসনে আরা বেগম পৃথিবী থেকে চিরবিদায় নেন। গোপালগঞ্জ মিশন স্কুলে পড়ার সময় দাদা শেখ কাসেম চাচাতো ভাই শেখ লুৎফর রহমানের ছেলে শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে ফজিলাতুন্নেছার বিয়ে দেন। বিয়ের পর সামাজিক রীতিনীতির কারণে স্কুলের বদলে গৃহশিক্ষকের কাছে লেখাপড়া করেন তিনি। শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ছোটবেলা থেকেই গৃহিণী ছিলেন। পরিবারের সদস্যদের প্রতি তিনি সবসময় দায়িত্বশীল ছিলেন। 


জীবদ্দশায় স্বামী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নানা পরামর্শ ও নির্দেশনা দিয়ে লড়াই-সংগ্রামের প্রেরণা যুগিয়েছেন। বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধসহ তৎকালীন সব সংগ্রামে তিনি গণমানুষের পক্ষে নিজ অবস্থান ব্যক্ত করেছেন। বঙ্গবন্ধুর জীবনে সমস্যা-সংকটে তিনি যেমন পরিবারের দায়িত্ব পালন করেছেন পরম মমতায়, তেমনি সাংগঠনিক দায়িত্বও পালন করেছেন যথেষ্ট সাহসিকতার সঙ্গে।

বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে মহীয়সী ফজিলাতুন্নেছা মুজিব দিকনির্দেশনা দিয়ে দলীয় নেতা-কর্মী ও অনুসারীদের সক্রিয় রাখতেন। কারাবন্দি বঙ্গবন্ধুর নির্দেশ ও নির্দেশনা নেতা-কর্মীদের জানাতেন। ১৫ আগস্ট বুলেটের সামনে দাঁড়িয়েও বিন্দুমাত্র বিচলিত হননি। হত্যাকারীদের এই জঘন্য কর্মকান্ডের প্রতিবাদ করেছেন বিপুল বিক্রমে। 

ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, বঙ্গবন্ধুর সব সাহসী পদযাত্রায় বেগম মুজিব ছিলেন সক্রিয় সহযাত্রী। আগরতলা মামলায় বঙ্গবন্ধু কারারুদ্ধ হবার পরে তার প্যারোলে মুক্তির জন্য সক্রিয় ষড়যন্ত্রটি সফল হতে পারেনি বঙ্গমাতার জন্য। বাঙালির স্বাধীনতা ও মুক্তির চূড়ান্ত মাহেন্দ্রক্ষণে বঙ্গমাতাই তার জীবনসঙ্গী বঙ্গবন্ধুকে সঠিক পথ বাতলে দিয়েছিলেন। বিশ্ব ঐতিহ্যের স্বীকৃতিপ্রাপ্ত বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ নিয়ে দলের নেতাসহ বিভিন্ন বিশিষ্ট ব্যক্তিদের নানা পরামর্শ ও নির্দেশনা ছিল। সেসব নিয়ে বঙ্গবন্ধু যখন দোটানায় তখন স্ত্রী ফজিলাতুন্নেছা মুজিবই তাকে বলেছিলেন, কারো নির্দেশনা বা পরামর্শ নয়, তোমার যা মনে আসে তাই বলো। অন্তরের অন্তস্থল থেকে উৎসারিত ১৯ মিনিটের সে ভাষণটি শুধু বাংলাদেশের স্বাধীনতার অনানুষ্ঠানিক ঘোষণাই ছিল না, পৃথিবীর ইতিহাসের একটি বহুল প্রচারিত ও সেরা ভাষণ হিসেবে বিবেচিত হয়।



মহীয়সী এ নারী বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের ৯১তম জন্মবার্ষিকীতে জাতি আজ শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে তাকে। আওয়ামীলীগ, অঙ্গ-সহযোগী, ভ্রাতৃপ্রতীম ও সমমনা সংগঠনগুলোসহ বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোও শ্রদ্ধা ভরে স্মরণ করবে বঙ্গমাতাকে।

কুশিয়ারা নিউজ পরিবারও বঙ্গমাতাকে গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছে। বাঙ্গালী নারীর মনে বঙ্গমাতার জীবনাদর্শের সফল প্রতিফলন ঘটুক, মহীয়সী নারীর ৯১তম জন্মদিনে এটাই কামনা। আমরা তাঁর রূহের মাগফেরাত কামনা করছি।

শেয়ার করুন