সম্মিলিত সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক পরিষদ যুক্তরাজ্য- এর বার্ষিক সাধারণ সভা ও নির্বাচন গত ২৫ জুলাই রবিবার পূর্ব লন্ডনের ১৩৫ নম্বর কর্মাশিয়াল স্ট্রিটের একটি হলে অনুষ্ঠিত হয়। এতে যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন শহর থেকে সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক কর্মীরা অংশ নেন। দুটি পর্বে অনুষ্ঠিত সভায় প্রথম পর্বে সংগঠনের এ জি এম অনুষ্ঠিত হয় এবং দ্বিতীয় পর্বে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
নির্বাচনে কবি ময়নুর রহমান বাবুলকে সভাপতি, কবি এ কে এম আব্দু্ল্লাহকে সাধারণ সম্পাদক ও লেখক আনোয়ার শাহজাহানকে কোষাধক্ষ করে ২৬ সদস্যবিশিষ্ট নিম্ন লিখিত নির্বাহী কমিটি ঘোষণা করা হয়।
সভাপতি- কবি ময়নুর রহমান বাবুল, সহ-সভাপতি কবি কাজল রশিদ, সাংস্কৃতিক কর্মী নুরুল ইসলাম এবং লেখক আবুল কালাম আজাদ ছোটন, সাধারণ সম্পাদক- কবি এ কে এম আব্দুল্লাহ, সহ- সাধারণ সম্পাদক- কবি এম মোসাইদ খান ও সংস্কৃত কর্মী স্মৃতি আজাদ, কোষাধ্যক্ষ- লেখক আনোয়ার শাহজাহান, সহকোষাধ্যক্ষ- কবি মো: মুহিদ, সাংগঠনিক সম্পাদক- প্রেজেন্টার মোস্তফা জামান চৌধুরী,সহ সাংগঠনিক সম্পাদক- মো: ইকবাল,মিডিয়া ও পাবলিকেশন সেক্রেটারী কবি সাংবাদিক জুয়েল রাজ,ফান্ডরাইজ সেক্রেটারী- কবি শরিফুজ্জামান,ইভেন্ট সেক্রেটারী- টিভি প্রেজেন্টার হেনা বেগম,ইসি সদস্য- লেখক ফারুক আহমেদ, কবি ইকবাল হোসেন বুলবুল,কবি আতাউর রহমান মিলাদ,কবি আবু মকসুদ,ছড়াকার আবু তাহের,ছড়াকার সাহাদত করিম,ছড়াকার সৈয়দ হিলাল সাইফ,কবি শামিম আহমদ,কবি ফারাহ নাজ,গল্পকার সাগর রহমান, কবি সাইম উদ্দিন খন্দকার, সাংবাদিক রহমত আলী।
নির্বাচন পরিচালনা করেন নাট্যভাস্কর ও লেখক ড. মুকিদ চৌধুরী, নাট্যকার ও সাংস্কৃতিক কর্মী নুরুল ইসলাম এবং কমিউনিটি ব্যক্তিত্ব লেখক আবুল কালাম আজাদ ছোটন।
উল্লেখ্য - সম্মিলিত সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক পরিষদ যুক্তরাজ্য (SSSPJ)মূলত বিলাতের বিভিন্ন সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোর সম্মিলিত রূপ। বিলাতের বাংলা সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডের মধ্যে ঐক্য ও সেতুবন্ধন রচনা করে এই বহুজাতিক সমাজে বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতির প্রচার ও প্রসারকে আরো বেগবান করতে ২০০৯ সালে এই সংগঠনের জন্ম। এটি গঠনের পর পরই ২০১০ সালের ১১, ১২ ও ১৩ জুলাই পূর্ব লন্ডনের ব্রাডি আর্ট সেন্টারে আয়োজন করা হয় ‘বাংলা একাডেমি বইমেলা ও সাংস্কৃতিক উৎসব’।
‘সম্মিলিত সাংস্কৃতিক পরিষদের আয়োজনে এবং লন্ডনসহ গোটা বিলাতের সাহিত্য ও সাংস্কৃতিককর্মিদের পৃষ্ঠপোষকতায় অনুষ্ঠিত বইমেলা ও সাংস্কৃতিক উৎসবে যোগ দিতে বাংলাদেশ থেকে আসেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক প্রফেসর শামসুজ্জামান খান। উদ্বোধন করেন সাহিত্যিক-সাংবাদিক ও কলামিস্ট আব্দুল গাফফার চৌধুরী। মেলায় বাংলা একাডেমির পাশাপাশি অংশগ্রহণ করে খ্যাতিমান প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান ইত্যাদি। সম্মিলিত সাংস্কৃতিক পরিষদের আয়োজনে প্রতি বছর লন্ডনে ‘বাংলা একাডেমি বইমেলা ও সাংস্কৃতিক উৎসব’ অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
২০১১ সালে ‘বাংলা একাডেমি বইমেলা ও সাংস্কৃতিক উৎসব’কে কেন্দ্র করে বাংলা একাডেমির একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ ছিল, ‘বাংলা একাডেমির প্রবাসী লেখক পুরস্কার’-এর প্রবর্তন। তখন থেকে প্রতি বছর বাংলা একাডেমি এই পুরস্কার প্রদান করে আসছে। বিলাতবাসী লেখকদের মধ্যে এই পুরস্কারটি পেয়েছেন- কাদের মাহমুদ, ডা: মাসুদ আহমদ, সালেহা চৌধুরী, ইসহাক কাজল, ফারুক আহমদ। ২০১৫ সালে পুরস্কারটির নামকরণ করা হয়, সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ পুরস্কার । তখন থেকে এ পুরস্কার প্রদান করা হয় মঞ্জু ইসলাম, শামীম আজাদ, সাগুফতা শারমীন তানিয়া ও মুজিব ইরম ।
২০১৫ সালে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার বহির্বিশ্বে বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতিকে তোলে ধরতে ‘বাংলা একাডেমি বইমেলা’র নামকরণ করা হয়, ‘বাংলাদেশ বইমেলা, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক উৎসব’। সে বছর বাংলা একাডেমির সাথে মেলায় অংশগ্রহণ করে ‘জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশনা সমিতি’।
২০১৮ সালের ২৩ এবং ২৪ শে সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ বইমেলা সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক উৎসব অনুষ্ঠিত হয়।প্রায় ১৯টি প্রকাশনী বাংলাদেশ থেকে এস যোগ দিয়েছিল। বাংলাদেশ সহ পৃথিবীর অন্যান্য দেশ থেকেও শিল্পী সাহিত্যিকেরা এসেছিলেন। সে বছর বিশিষ্ট সাংবাদিক, সমাজকর্মী, সংগঠক ও রাজনীতিবিদ তাসাদ্দুক আহমদের নামে ‘তাসাদ্দুক আহমদ পুরস্কার’, এবং স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্ত বিশিষ্ট লেখক-সাংবাদিক,স্বাধীনতাযুদ্ধে বিলাতবাসীদের ভূমিকা নিয়ে লিখিত প্রথম গ্রন্থসহ প্রায় অর্ধশতাধিক গ্রন্থের লেখক আব্দুল মতিনের নামে ‘আব্দুল মতিন সাহিত্য পুরস্কার’ প্রদান করা হয়। বাংলাদেশ থেকে প্রধান অতিথি হয়ে এসেছিলেন কবি আসাদ মান্নান।
এরপর,২০১৯ সালের ৮ এবং ৯ সেপ্টেম্বর পূর্ব লন্ডনের ব্রাডিআর্ট অ্যান্ড কমিউনিটি সেন্টারে ‘বাংলাদেশ বইমেলা, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক উৎসব ২০১৯ অনুষ্ঠিত হয়।গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়, বাংলা একাডেমি, বাংলাদেশ পুস্তকপ্রকাশনা ওবিক্রেতা সমিতি, ঢাকা; বাংলাদেশ হাইকমিশন, লন্ডন এবং বিলাতের সকল লেখক-পাঠক-সাংবাদিক-কবি- সাহিতি ̈ক ও সংস্কৃতিকর্মী তথা কমিউনিটির সর্বস্তরের মানুষের সহযোগিতায় আয়োজিত মেলায় সে বছরও বাংলাদেশ থেকে ১৭টি প্রকাশনা সংস্থাএবং বিলাতভিত্তিক পাঁচটি, বইমেলায় অংশগ্রহণ করে। মেলায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণপ্রজীাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় সংস্কৃতিবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এমপি। বিশেষ অতিথি ছিলেন-যুক্তরাজ্য ̄’ বাংলাদেশের মান্যবর হাইকমিশনার সাঈদা মুনা তাসনিম, টাওয়ার হেমমলেট্স কাউন্সিলের নির্বাহী মেয়র মি. জন বিগ্স, মহান একুশের অমর গানের রচয়িতা বিশিষ্ট সাহিত্যিক ও সাংবাদিক আবদুল গাফফার চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের চেয়ারম্যান ভীষ্মদেব চৌধুরী, বিশিষ্ট সাহিত্যিক ড. শাহাদুজ্জামান; ড. শেখ মুসলিমা মুন প্রমুখ।